শিশুর ঠাণ্ডার সমস্যা
অনেক বাচ্চারই বছরের কিছু সময় সর্দি-কাশি লেগেই থাকে। এ রকম ঠাণ্ডা লাগার ধাত থাকলে ঠিক কী ধরনের অসুবিধা হয়, চিকিৎসার ধরন কী এবং কিছু সাধারণ সাবধানতার কথা জানা থাকলে খানিকটা সচেতন হওয়া যায়।
কেন হয়?
বংশগত ধারা যদি কোনও পরিবারে কারও সর্দি-কাশির ধাত থাকে, তবে পরবর্তী সময়ে বাচ্চাদেরও এ ধাত তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। সিজনাল কারণ সাধারণত শীতে এবং বর্ষার এক্সপ্রোজারের ফলে ঠাণ্ডা লাগার সমস্যা বাড়ে। এ দুই সিজনে ভাইরাল, ব্যাকটেরিয়াল, ফাঙ্গাল ইনফেকশনের সম্ভাবনাও বেশি। গরমে আবার ঘাম বসে ঠাণ্ডা লেগে যায়। সিজন চেঞ্জের সময়েও টেম্পারেচার ফ্লাকচুয়েশনের জন্য ঠাণ্ডা লেগে যায়। অ্যালার্জি অ্যালার্জি থেকে অনেক বাচ্চারই সর্দি-কাশি হয়। যাদের ঠাণ্ডা লাগার ধাত থাকে তাদের এ প্রবণতাকে আরও বাড়িয়ে দেয় অ্যালার্জি। একেকটি বাচ্চা একেক জিনিসে হাইপারসেনসিটিভ থাকে। যেমন ধুলো-ধোঁয়া, কিছু খাবার বিশেষত প্রোটিনজাতীয় খাবার, ফুলের রেণু। শীতে পানি-বাতাস খুব শুকনো হয়ে যায়, ফলে ধুলোয় সর্দি-কাশির সমস্যা থাকলে তা বাড়ে। কী উপসর্গ দেখা দেয়? নাকে পানি ঝরা, হাঁচি, কাশি, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, মাথায় ভার ভাব, গলায় ব্যথা, গিলতে অসুবিধা, শ্বাসকষ্ট। বুকে সর্দি বসে। বুকে ইনফেকশনও হয়। মাথা ও কপালে যন্ত্রণা, জ্বর, গায়ে ব্যথা, বাচ্চার খিটখিটে ভাবও দেখা যায়। ঠাণ্ডা লাগার সূত্র ধরে অন্যান্য সংক্রমণ ও সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন ব্রঙ্কিওল অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিস, ব্রঙ্কিওলাইটিস। যেসব বাচ্চার এ জাতীয় সমস্যা আগে থেকেই আছে ঠাণ্ডা লাগা থেকে তাদের সাবধানে রাখা দরকার। টনসিলাইটিস থাকলে তাও বাড়তে পারে। অনেক সময় ঠাণ্ডা লাগার সঙ্গে ডায়রিয়াও হতে দেখা যায়। অ্যালার্জি থেকে যাদের সর্দি-কাশি হয়, তাদের সেই সঙ্গে শ্বাসকষ্ট অথবা ত্বকে নানা সমস্যা হতে পারে। চিকিৎসা বাচ্চার ঠাণ্ডা লাগলে প্রথমে বোঝা দরকার, কেন লেগেছে। তারপর অবশ্যই ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা করানো দরকার। তবে মা-বাবার কিছু সাধারণ জ্ঞান থাকা ভালো। সর্দি-কাশি প্রাথমিক স্তরে থাকলে কিছু ওষুধ দিয়েই বাচ্চার কষ্ট সাময়িকভাবে কমানো যেতে পারে। যেমনÑ ন্যাজাল ডিকনজেস্ট্যান্ট, অ্যান্টি হিস্টামিন, কফ সাপ্রেস্যান্ট, এক্সপেক্টোর্যান্ট। এগুলো নাকের পানি ঝরা কমাতে, হাঁচি, কাশি বন্ধ করতে কাজ করে। খুব ছোট বাচ্চাকে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এসব ওষুধ দেয়া উচিত নয়। সর্দি-কাশি খুব বেড়ে গেলে অ্যান্টিবায়োটিক দেয়ার দরকার হতে পারে। অ্যাজমা খুব বেড়ে গেলে স্টেরয়েডও দেয়া হয়। অ্যাজমা, অ্যাকিউট ব্রঙ্কাইটিসের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শমতো নেবুলাইজার, ইনহেলার ব্যবহার করতে হতে পারে। প্রয়োজনে ডাক্তারের অ্যাডভাইস অনুযায়ী অ্যান্টিভাইরাল ভ্যাকসিনও দেয়া যেতে পারে। এক্সারসাইজ এই ক্ষেত্রে সব থেকে ভালো এক্সারসাইজ হল সাঁতার। সাধারণ সাবধানতা কতগুলো সাবধানতা নিলেই বাচ্চাদের ঠাণ্ডা লাগার সম্ভাবনা কিছুটা কমানো যায়। শীতে শিশুকে উপুযক্ত পরিমাণে গরম জামাকাপড় পরান। বুক, মাথা, কান, গলা অবশ্যই ঢেকে রাখা দরকার। বর্ষাকালে যেন বাচ্চা বেশি বৃষ্টিতে না ভেজে। অনেক সময় স্কুলে যাওয়ার পথে বাচ্চারা বৃষ্টিতে ভেজে। সেই ভেজা জামা-জুতা নিয়ে সারাদিন থাকে। এ ক্ষেত্রে বাচ্চার কাছে আলাদা এক সেট স্কুল ড্রেস রেখে দিন। যাতে প্রয়োজনে চেঞ্জ করতে পারে। বাচ্চা বেশি ঘেমে গেলেই তার গা মুছে শুকনো জামাকাপড় পরিয়ে দিন। খুব গরম থেকে আসার পর ঠাণ্ডা খাবার একদম দেবেন না। ধুলো-ধোঁয়ার অতিরিক্ত সমস্যা হলে প্রতিরোধক হিসেবে বাইরে বেরুনোর সময় মাস্ক পরানো দরকার কি না বিশেষজ্ঞের কাছে জেনে নিন। কোনও বিশেষ খাবার খেলে বাচ্চার অ্যালার্জি হয় কিনা খেয়াল করুন। তাহলে সেই খাবার প্রথমে বেশি না দিয়ে অল্প করে দিন, ধীরে ধীরে পরিমাণ বাড়াতে থাকুন। যদি তাতেও সহ্য করতে না পারে তবে একদমই বন্ধ করে দিন। বাচ্চাকে যথেষ্ট পরিমাণে পানি খাওয়াতে হবে। সর্দিকাশির জন্যে ফ্লুইড লসজনিত যে সমস্যা হয়, এতে তা এড়ানো যায়।
প্রতিরোদের উপায়
# -প্রতিদিন খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠে দুই অথবা তিন কি.মি. হাঁটুন। এরপর গোসল করুন। এতে মন এবং প্রাণ সতেজ থাকবে।
# -সব সময় সোজা হয়ে বসুন।
# -যখনই খাবার খাবেন তখন ভালো করে চিবিয়ে খাবার গ্রহণ করুন। এতে পাচন ক্রিয়া ঠিক থাকবে।
# -মোটা হওয়ার প্রধান কারণ হল- তৈলাক্ত এবং মিষ্টি জাতীয় পদার্থ খাওয়া। তাই এ ধরনের খাবার খুব কম পরিমাণে খান।
# -সপ্তাহে একদিন উপস করে শরীরে খাবারের সমতা বজায় রাখুন।
# -খাবারের মধ্যে খুব বেশি পরিমাণে সবুজ শাক-সবজি আর ফল খাবেন।
# -ঘরের সব কাজ নিজে করার চেষ্টা করুন।
# -ব্যস্ত থাকাটা শরীর ও মন দু’য়ের পক্ষে ভালো। তাই কাজে ব্যস্ত থাকুন।
# -গরমের দিনে রাতে ঘুমাবার আগে গোসল করুন এতে ঘুম ভালো হবে।
# -রাতে ঘুমাবার আগে ঢিলে ঢালা পোশাক পড়ে ঘুমান। শরীরের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ লোম ছিদ্রের মধ্যদিয়ে শ্বসন প্রক্রিয়া চালায়। সেই কারণে ঘুমাবার আগে ঢিলেঢালা পোশাক পড়ে ঘুমান।
# -চুলের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখুন। কারণ চুল হল সৌন্দর্যের অঙ্গ। সপ্তাহে একদিন হার্বাল শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে নিন।
# -প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট ধ্যান করুন। এতে মানসিক শান্তি পাবেন। তার উপর মনের জোরও বাড়বে।
# -রাতে ঘুমাবার সময় মনে কোনো চিন্তা রাখবেন না। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য গভীর ঘুম অত্যন্ত জরুরি।
# -ক্রোধ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলুন।
# -প্রতিদিন নিয়ম করে অন্তত ৩০ মিনিট হাটুন। এতে হার্ট সবল থাকবে।
# -প্রতিদিন নিয়ম করে প্রচুর পরিমানে বিশুদ্ধ পানি পান করলে অনেক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় ৷
বিষয় সমুহ...
বিভাগীও শহর তথ্য কনিকা

আরো কিছু গুরুত্তপূর্ণ বিষয়...
শিশুর ঠাণ্ডার সমস্যা ?
বুধবার, ৯ মার্চ, ২০১১অন্তরভুক্ত বিষয় সাস্থ সমস্যা
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 আপনার মতামত:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।