নারীনীতি বাস্তবায়ন করলে হরতাল ডাকার কোন প্রয়োজন নেই!

সোমবার, ৪ এপ্রিল, ২০১১

জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতির দুটি ধারা কোরআন ও সুন্নাহবিরোধী—এই যুক্তি দেখিয়ে ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটি হরতাল ডাকায় বিভিন্ন নারী ও মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন। বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে এই ‘অযৌক্তিক’ হরতাল প্রত্যাহারেরও আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

নারীনীতি বাস্তবায়নের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গতকাল বিভিন্ন নারী সংগঠন মানববন্ধন করে

গতকাল রোববার নগরের রাজপথ নারী ও মানবাধিকারকর্মীদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়ায় মুখরিত হয়ে ওঠে। সব কর্মসূচি থেকে নারীনীতি বাস্তবায়ন ও হরতাল প্রত্যাহারের দাবি তোলা হয়।
সম্মিলিত নারীসমাজ: জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সম্মিলিত নারীসমাজের ব্যানারে সাংসদ, বিভিন্ন নারী, মানবাধিকার ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে মানববন্ধন হয়। ক্রমে বিশাল হয়ে ওঠা এই মানববন্ধনে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন বহনকারী নারীরা নারীনীতি বাস্তবায়নের দাবি তুলতে থাকেন। তাঁরা নারীনীতি নিয়ে ‘ধর্ম ব্যবসা’ না করার জন্যও আহ্বান জানান। ধর্মের ভয় দেখিয়ে নারীদের দমিয়ে রাখা যাবে না বলে জানিয়ে দেন তাঁরা।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম, সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরী, জাতীয় সংসদের হুইপ সাগুফতা ইয়াসমীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহমুদা ইসলাম, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ, সাংসদ তহুরা আলী, তারানা হালিম, নাজমা আখতার প্রমুখ বক্তব্য দেন। আয়শা খানম বলেন, ‘ধর্ম নিয়ে রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। দ্রুত কর্মকৌশল তৈরি করে এই নারীনীতি বাস্তবায়নে অগ্রসর হতে হবে। পিছিয়ে যাওয়া চলবে না।’
তহুরা আলী বলেন, নারীদের অধিকার দেবেন না—এটা খালেদা জিয়া সামনে এসে বলতে পারছেন না। তাই পেছন থেকে মদদ দিচ্ছেন।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট: বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও মানববন্ধনের আয়োজন করে। সভাপতির বক্তব্যে সাংসদ ও জোটের সাধারণ সম্পাদক তারানা হালিম বলেন, ‘সম্পত্তিতে নারীর সমান অধিকার, যা নারীদের দীর্ঘদিনের দাবি, তা নীতিতে নেই। তাহলে যা নেই, তাকেই ইস্যু করে কীভাবে হরতাল ডাকে? নারীরা যে সাংবিধানিক অধিকার ও বৈষম্যহীনতা ভোগ করছেন, নীতিতে সেটিরই পুনরাবৃত্তি হয়েছে মাত্র।’
সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি: ৬৪টি নারী, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের জোট সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির এক বিবৃতিতে হরতালে বিরোধী দলের সমর্থন দেওয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যায়িত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, নারীনীতি নিয়ে যে ‘বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে তা অগণতান্ত্রিক, অমানবিক।’
কমিটি হরতালকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে এর তীব্র নিন্দা জানায়। ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্যও বিবৃতিতে সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি: এর আগে গত শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যকরী পরিষদের সভায় নীতিমালার বিরোধিতাকারী ও নারীবিদ্বেষী উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান সমিতির প্রতিনিধিরা। সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন সভায় সভাপতিত্ব করেন।

0 আপনার মতামত:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।

Avro Keyboard - Unicode Compliant FREE Bangla Typing Softwareবাংলা লিখার সপ্টওয়্যার আভ্র ডাউনলোড করতে খানে ক্লিক করুন
 
 
 

বিশাল বাংলা

কম্পিউটার প্রতিদিন

রাজনীতি...

বিনোদন

খেলার খবর

অর্থ ও বাণিজ্য