রাহুচক্রে আটকা পড়েছেন প্রভা। তাইতো একের পর নাটকীয় ঘটনা জন্ম দিচ্ছেন টিভি অভিনেত্রী প্রভা। হঠাৎ বিয়ে করে নাটকীয় ঘটনা জন্ম দেয়ার পর প্রভার আত্মহত্যার ঘটনা আরেক নাটকীয় ঘটনার জন্ম দিল। জনপ্রিয় নাট্যাভিনেত্রী প্রভা তার প্রাক্তন প্রেমিক রাজীবকে বাদ দিয়ে অপূর্বকে বিয়ে করায় রাজীব প্রভা ও তাদের মধ্যকার অবৈধ সম্পর্কের অশ্লীল ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেন। যার ফলে দেশজুড়ে এই অশ্লীল ভিডিও নিয়ে হৈ চৈ পড়ে যায়। প্রভা আর তার পরিবার সামাজিকভাবে এক অপ্রীতিকর অবস্থায় পড়েন।

পরে অপূর্ব এবং প্রভা হাসিমাখা কণ্ঠে তাদের ভাল থাকার সংবাদ জানালেও তারা যে আদৌ ভাল নেই এমন তথ্যই মিলেছে তত্ত্ব-তালাশে এবং দু’জনের নানা ঘনিষ্ঠ জনের সঙ্গে কথা বলে। আর এ ভাল না থাকার পেছনে কারণ সাবেক প্রেমিক রাজিবের সঙ্গে প্রভার নগ্ন ভিডিওচিত্র। যা গত এক মাস ধরে ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেশ ছাড়িয়েও ছড়িয়ে পড়েছে সারা পৃথিবীতে। অনেকের মোবাইল ফোনেও এখন ঠাঁই করে নিয়েছে এটি। এছাড়া সিডি আকারেও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে এ নগ্ন ভিডিওচিত্র। প্রভা-অপূর্বর বিয়ের চারদিনের মাথায় ফেসবুকে প্রকাশ পায় প্রভার প্রথম নগ্ন ভিডিওচিত্রটি। ২ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিও একদিনের মাথায় ছড়িয়ে যায় অন্তত ২০০ ওয়েবসাইটে। এর তিন দিন পর প্রথম প্রকাশ পায় একই ভিডিওর দ্বিতীয় অংশ। এরপর একদিন অন্তর অন্তর বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রকাশ পায় আরও পাঁচটি নগ্ন ভিডিওচিত্র। সর্বশেষ পুরনো ভিডিওসহ একসঙ্গে প্রকাশ পায় দীর্ঘ ২৬ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড ব্যাপ্তির একটি পূর্ণাঙ্গ নগ্ন ভিডিওচিত্র। এ ভিডিওচিত্রে পুরনো ৬টি এবং নতুন একটি নগ্ন ক্লিপও জুড়ে দেয়া হয়। যেগুলোতে প্রেমিক রাজিবের সঙ্গে প্রভার উপস্থিতি ঘটেছে নীল ছবির একজন প্রফেশনাল নায়িকার মতোই।
সদ্য বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন ড্রইংরুম মিডিয়ার জনপ্রিয় মুখ অপূর্ব ও প্রভা। নিবিড় ভালবাসার টানে গত ১৯ আগস্ট পালিয়েই কাজটি সেরেছিলেন তারা। এরপর দিন দুয়েকের জন্য ঢাকার বাইরে গা ঢাকা দেয়া এবং অবশেষে ফিরে এসে সংসার শুরু। অপূর্ব-প্রভার এ হঠাৎ বিয়ে বিস্মিত করেছিল মিডিয়ার মানুষ তথা সাধারণদেরও। কারণ এ বছরের ১৬ এপ্রিল ঢাকঢোল পিটিয়ে আট বছরের প্রেমিক ব্যবসায়ী রাজিব হাসানের সঙ্গে প্রভার আংটি বদল হয়। ডিসেম্বরে বিয়ে হবে- এমনটাও নির্ধারিত হয় প্রভা ও রাজিব উভয়ের অভিভাবকদের সিদ্ধান্তে। এমতাবস্থায় হঠাৎ কি করে অপূর্বর সঙ্গে তার এত গভীর প্রেমের বন্ধন তৈরি হয় এবং তা শেষ পর্যন্ত বিয়েতে গড়ায়- তা বিস্ময়মাখা জিজ্ঞাসারই সৃষ্টি করে সব মহলে। যদিও এ জিজ্ঞাসার কোন সদুত্তর মেলেনি অপূর্ব কিংবা প্রভার কাছ থেকে। তবে তত্ত্ব-তালাশে জানা গেছে, সাম্প্রতিক বেশিমাত্রায় বিভিন্ন রোমান্টিক গল্পের নাটকে নায়ক-নায়িকা হয়ে অভিনয় এবং ইদানীং রাজিবের সঙ্গে প্রভার বনিবনা না হওয়ার বিষয়টিই কাজ করেছে এক্ষেত্রে। এছাড়া অপূর্বের কাছের একজন নাট্য নির্মাতার প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয়ও এ ব্যাপারে সহায়তা করেছে বলে জানিয়েছেন অপূর্ব-প্রভার ঘনিষ্ঠজনরা। আর এ কারণেই প্রভার নগ্ন ভিটিওচিত্র প্রকাশ হওয়ার পর এমন একটি মেয়েকে বিয়ে করার ব্যাপারে উৎসাহ যোগানোর দায়ে এখন সেই নির্মাতাকে কিছুটা দুষছেন অপূর্বের কাছের কেউ কেউ। এসব বিষয় নিয়ে এখন ব্যাপক চাপের মুখে আছেন অপূর্বও। প্রভার এহেন কর্মকাণ্ডের জেরে এরই মধ্যে দু’জনের অভিনীত বেশ কটি নাটকের প্রচার সিডিউল বাতিল হয়ে গেছে। নতুন অনেক কাজও হয়ে যাচ্ছে হাতছাড়া। জানা গেছে, অপূর্ব স্ত্রীর নগ্ন ভিডিওচিত্র দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বিষয়টি নিয়ে নানা জনের নানা তীর্যক প্রশ্নবানে জর্জরিত তিনি। মানসিকভাবে বেশ ভেঙে পড়েছেন। নাটকের শুটিং ছাড়া খুব একটা বাইরে বের হন না। বন্ধু-স্বজনদের কাছে প্রভাকে নিয়ে ব্যক্ত করছেন দারুণ হতাশা। প্রভার বিষয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়ার কথাও ভাবছেন তিনি। অপূর্ব ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রে জানা গেছে, খুব শিগগিরই হয়তো অপূর্ব প্রভাকে ডিভোর্স দিয়ে দিতে পারেন। ছেলের ভালবাসাকে মূল্য দিয়ে প্রভাকে পুত্রবধূ হিসেবে হাসিমুখেই মেনে নিয়েছিলেন অপূর্বের মা। কিন্তু প্রভার নগ্ন ভিডিওচিত্র প্রকাশ পাওয়ার পর তিনিও মুষড়ে পড়েছেন। আত্মীয়-স্বজনদের বলছেন অপূর্বকে বোঝাতে যাতে প্রভার বন্ধন থেকে তিনি মুক্ত হন। সরকারি চাকুরে প্রভার বাবা-মাও মেয়ের কর্মকাণ্ডে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন। মেয়ের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন করেছেন সব রকমের যোগাযোগ। এসব কারণেই বেশ নাজুক অবস্থায় এখন দিন কাটছে প্রভার। নিজের মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে রেখেছেন। গত বুধবার অপূর্বের সঙ্গেই একটি নাটকের শুটিংয়ে উত্তরায় ছিলেন রাত ১০টা পর্যন্ত। এরপর থেকে শুধু বৃহস্পতিবার ঘন্টা দুয়েকের জন্য এক নাট্য নির্মাতার বাসায় গিয়েছিলেন। এছাড়া এক রকমের স্বেচ্ছায় গৃহবন্দিই হয়ে আছেন তিনি।
এদিকে ধারাবাহিকভাবে প্রভা-রাজিবের নগ্ন ভিডিওচিত্রগুলো প্রকাশের পর এর উৎস নিয়ে নানা প্রশ্ন, আলোচনা চারদিকে। তবে এ নিয়ে প্রভার সাবেক প্রেমিক রাজিব এক বিবৃতিতে বলেছেন, তৃতীয় কোন ব্যক্তির মাধ্যমে এই ভিডিও চিত্রগুলো এভাবে ছড়িয়েছে। এগুলো একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়। প্রভা এবং আমার-দু’জনেরই মোবাইল ও ল্যাপটপে ছিল। দীর্ঘদিন আগেই এগুলো আমরা ডিলিট করে দিয়েছিলাম। হতে পারে এগুলো আমাদের কাছ থেকে কেউ গোপনে সরিয়ে নিয়েছিল। পরিস্থিতি ঘোলা করার জন্য এখন এগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে। বিবৃতিতে রাজীব আরও বলেন, নিজের একান্ত ভিডিও ফুটেজ কেউ এভাবে প্রকাশ করতে পারে না। যে কোনও সময় যে কোন সম্পর্কে ফাটল ধরতে পারে। কিন্তু সে জন্য কেউ দীর্ঘ আট বছরের সুন্দর সম্পর্ককে এভাবে ছোট করতে পারে না। আমাদের দু’জনেরই সামাজিক অবস্থানকে নষ্ট করার জন্য কেউ এ কাজে লিপ্ত হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে গত কয়েকদিন যাবত এক অনিশ্চয়তার মাঝে আছেন সবাই, প্রভা কি সত্যিই আত্মহত্যা করেছেন। তবে সর্বশেষ খবর তারা দু’জনেই ভালো আছেন। সুস্থ আছেন। দু’জনই বর্তমানে শুটিং করছেন নতুন ধারাবাহিক নাটক পথ জানা নেই-এর। নাটকটি নির্দেশনা দিচ্ছেন সৈয়দ জামিম। ঈদের পর এটাই প্রভা আর অপূর্ব অভিনীত প্রথম কোন নাটক। শোনা যাচ্ছে প্রভা আর আপাতত নাটকে অভিনয় করতে পারবেন না।
এটা অপূর্বেরই আদেশ বা অনুরোধ। প্রভা ঘর থেকে খুব প্রয়োজন ছাড়া কোথাও বের হতে পারবেন না। এমন নানান গুঞ্জনে মুখরিত দেশের পুরো মিডিয়া অঙ্গন। সবাই অপেক্ষা করছেন কি হয় শেষে। কারণ এরই মধ্যে অনেকেই বলছেন খুব শিগগিরই প্রভা আর অপূর্বও মাঝে তালাক হয়ে যাবে। আসলে সবকিছুই নির্ভর করছে অপূর্বের ইচ্ছে অনিচ্ছার উপর। দেখা যাক, এখন শুধু সময়ের জন্য অপেক্ষা।
তবে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন সাদিয়া জাহান প্রভা। প্রভা বলেন, আমি ভাল আছি। আমাকে নিয়ে আত্মহত্যার যে খবরটি ছড়ানো হচ্ছে তা মোটেও সত্য নয়। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
অভিযোগের আঙ্গুল তুললেন সাবেক প্রেমিক রাজীবের দিকে। প্রেম, বিয়ে এবং ব্যক্তিগত নানা ঝড়ঝাপ্টার পর এই প্রথম মিডিয়ার সামনে এলেন বর্তমান সময়ের আলোচিত মডেল ও অভিনেত্রী। তিনি বললেন, জীবিত একজন মানুষকে মেরে ফেলা হয়েছে। অথচ আমার কী এমন অপরাধ যে আমাকে এভাবে হেয় করা হচ্ছে?
তিনি জানান, রাজিবের সঙ্গে গত দুই বছর ধরেই তার সম্পর্ক খারাপ যাচ্ছিলো। প্রভা বলেন, রাজিব খুবই আত্মকেন্দ্রীক ও স্বার্থপর ছেলে। ও কখনই আমাকে ভালোবাসেনি। ওর সঙ্গে অনেকটা চাপের মুখেই আমার বাগদান হয়। পরে ওর উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে আমি অপূর্বকে বিয়ে করি। তাছাড়া ও যেসব করছে, তা কোন ভদ্র মানুষ করে বলে মনে হয়না।
তিনি জানিয়েছেন রাজিবের সঙ্গে আমার বাগদান হওয়ার পর যখন বুঝলাম সে আমাকে ভালোবাসেনা তখন আমি কাজের মধ্যে ডুবে থাকার চেষ্টা করলাম। এরপর এমনও হয়েছে, টানা ত্রিশদিন আমি কাজ করেছি যাতে ওর সঙ্গে আমার কোন ভাবেই দেখা না হয়। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে প্রভা বলেন, আমি অন্য সব বাঙালী নারীর মতো স্বামী সংসার নিয়ে ভালো থাকতে চেয়েছি। এটাই কী আমার অপরাধ?
স্বামী ও সহকর্মী জিয়াউল ফারুক হক অপূর্ব সম্পর্কে প্রভা বলেন, অপূর্ব মানুষ হিসেবে খুবই ভালো। তিনি বলেন, আগে থেকেই ও আমার প্রতি যতœবান ছিলো। তাছাড়া যেমন সহকর্মী হিসেবে একসঙ্গে কাজ করেছি তেমনি ভালো বন্ধুত্বের সম্পর্কও ছিলো আমাদের মধ্যে।
অপূর্বের সঙ্গে সম্পর্কের শুরু বিষয়ে প্রভা বলেন, তাদের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া থাকলেও শুরুতে সম্পর্কের বিষয়টা দু’জনের কাছেই ধোঁয়াটে ছিল। তবে, প্রভা জানান, অর্পূবকে আমার ভালো লাগতো।
হঠাৎ করে অপূর্বের সঙ্গে বিয়ের প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, আমার পরিবার থেকেও বিয়ের জন্য চাপ আসছিলো। প্রবাসী এক ছেলের সঙ্গেও পরিবার থেকে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া হয়। সবকিছু মিলিয়ে আমি অনেক চাপের মধ্যে ছিলোম। হাপিয়ে উঠেছিলাম আমি।
0 আপনার মতামত:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।