প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতি থেকে মুক্ত করতে হবে। এ সময় জনগণকে সুদখোর ও কালোবাজারি মুক্ত দেশ উপহার দেয়ার ঘোষণা দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাছিনা
রবিবার নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মদনগঞ্জ এলাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের মানুষকে দারিদ্র্যের কষাঘাত থেকে মুক্তি দিয়ে আত্মনির্ভরশীল করে তোলার লক্ষ্যে মহাজোট সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৪ সালের মধ্যে আমরা নিরক্ষরমুক্ত বাংলাদেশ গড়ব এবং বিদ্যুতের সমস্যা সমাধান করব।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে দেশে উন্নয়নের ধারা সচল হয়। শিক্ষার মান ও হার দুটোই বাড়ে। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তা হয় নিন্মমুখী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঘুষখোর-সুদখোর ও দুর্নীতিবাজ-জঙ্গিবাদীরা কখনো দেশ ও জনগণের মঙ্গল করতে পারে না। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করেছে এবং বিভিন্ন সময়ে দেশের স্বাধীনতার স্বপ্ন ও অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করেছে।
তিনি বলেন, একাত্তর সালের পরাজিত শক্তিরা ক্ষমতায় গেলে আর যাই করুক দেশের মঙ্গল ও স্বাধীনতার চেতনাকে প্রতিষ্ঠা করতে পারে না। তাদের ক্ষমতায় আসা মানে ঘুষ, দুর্নীতি, সন্ত্রাস আর লুটপাটের মাধ্যমে দেশকে ধ্বংস করা।
জনগণকে বর্তমান সরকার ও বিগত বিএনপি-জামায়াত সরকার আমলের দ্রব্যমূল্যের পার্থক্য নির্ণয়ের আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বেড়েই চলেছে। এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে।
তিনি বলেন, সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিদেশ থেকে ৪০/৪৫ টাকা দরে চাল আমদানি করে ২৪ টাকায় সারা দেশে ওএমএসের মাধ্যমে বিক্রি করা হচ্ছে। ভিজিএফসহ নানা প্রকল্পের মাধ্যমে বিনামূল্যে গরীব মানুষকে চাল দেয়া হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ’৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপির রেখে যাওয়া ২৫ টাকা কেজি দরের চাল ১০ টাকায় এনেছিলাম। আর আমাদের রেখে আসা ১০ টাকা কেজির চাল বিএনপি-জামায়াত সরকার ৪৫ টাকা করেছে। তা কেন হয়েছে?’
প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জবাসীর উদ্দেশে বলেন, ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ সহজ করার জন্য শীতলক্ষ্যা সেতু হবে এবং নারায়ণগঞ্জকে সিটি করপোরেশন করা হবে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জসহ প্রতিটি জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য নাসিম ওসমান, গাজী গোলাম দস্তগীর, কায়সার হাসনাত, সারাহ্ বেগম কবরী, নজরুল ইসলাম বাবু, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ পৌর মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভি, জাপা কেন্দ্রীয় নেতা লিয়াকত হোসেন খোকাসহ মহাজোট নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে প্রধানমন্ত্রী বেলা আড়াইটায় সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুতকেন্দ্রের ভিতরে দেশ এনার্জি লিমিটেডের একশ’ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট উদ্বোধন করেন। এ বিদ্যুতকেন্দ্রে উৎপাদিত একশ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রতিদিন জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।
পরে শীতলক্ষ্যা নদী পার হয়ে সড়ক পথে বন্দরের ধামগড় ইউনিয়নের হরিপুরে যান। সেখানে তিনি ৩৬০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্টের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
এছাড়া বন্দরের মদনগঞ্জে সামিট পাওয়ার গ্রুপের ফার্নেস ওয়েল ভিত্তিক ১০২ মেগাওয়াট কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনটি কেন্দ্রের ফলক উম্মোচন শেষে প্রধানমন্ত্রী মোনাজাত করেন এবং কেন্দ্রের বিভিন্ন সাইট ঘুরে দেখেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই এলাহি চৌধুরী, বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) মুহাম্মদ এনামুল হক, সচিব আবুল কালাম আজাদ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান এএসএম আলমগীর কবির প্রমুখ।
0 আপনার মতামত:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।