ফ্রান্সে জনসমাগম স্থলে মুসলিম নারীদের নেকাব ও বোরকা পরা নিষিদ্ধ করে বিতর্কিত আইনটি সোমবার থেকে কার্যকর হয়েছে। এখন থেকে কোনো মুসলিম নারী নেকাব কিংবা বোরকা পরিধান করলে সর্বোচ্চ ২১৬ ডলার জরিমানা দিতে হবে এবং তার নাগরিকত্বও বাতিল করা হতে পারে। সূত্র: আল-জাজিরা অনলাইন।
এদিকে নেকাব ও বোরকা নিষিদ্ধের আইন অমান্য করার জন্য নারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অনেক মুসলিম। অন্যদিকে এই নেকাবের আইন অমান্য করার পক্ষে প্রচারণার জন্য কয়েক মিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি বাড়ি বিক্রির ঘোষণা দিয়েছেন এক প্রপার্টি ব্যবসায়ী।

প্রপার্টি ব্যাবসায়ী রাশিদ নেক্কাজ জনগণকে প্যারিসের নটরডেম ক্যাথেড্রালে গিয়ে সোমবার এই আইনের বিরুদ্ধে নীরবে প্রার্থনা করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এই আইনের বিরোধিতা করার জন্য আমি সকল মুক্ত নারীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, যারা সড়ক এবং জনসমাগম স্থলে নেকাব পরতে ইচ্ছুক।’
এদিকে ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলীয় অ্যাভিগননে ইতিমধ্যে এক মুসলিম তরুণী জনসমাগম স্থলে নেকাব পরিধানের মাধ্যমে কার্যকর হওয়া নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেছেন।
৩২ বছর বয়সী কেনজা দ্রিদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্যারিসে একটি টেলিভিশন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমি প্রোগ্রামটিতে নেকাব পরেই অংশ নিতে যাচ্ছি। আমি আজ নেকাব নিষিদ্ধের আইন কার্যকরের প্রথম দিনটির মুখোমুখি হয়েছি’।
তিনি বলেন, ‘এই আইন আমার ইউরোপীয় অধিকারকে খর্ব করে। আমার অধিকার রক্ষার কোন বিকল্প নেই। কোথাও আসা-যাওয়া এবং ধর্মীয় বিধি-বিধান অনুসরণের স্বাধীনতা আমার রয়েছে।’
কেনজার স্বামী আলাল বলেন, ‘এই আইন কার্যকরের ফলে আমার স্ত্রীকে বাসায় আবদ্ধ হয়ে থাকতে হবে। আপনি এটাকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারবেন? আমার স্ত্রী গত ১৩ বছর ধরে নেকাব পরিধান করে আসছেন এবং এতে কেউ বিব্রত বোধ করেনি।’
প্রসঙ্গত, ফান্সে প্রায় ৫০ লাখ মুসলিম বসবাস করে। তারা পশ্চিমে ইউরোপের বৃহৎ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। তবে তাদের মধ্যে দুই হাজারেরও কম মুসলিম নারী নেকাব ও বোরকা পরিধান করে থাকেন। প্রথম ইউরোপীয় রাষ্ট্র হিসাবে ফ্রান্সে নেকাব নিষিদ্ধের আইন কার্যকর হলো।
এছাড়া পার্শ্ববর্তী বেলজিয়ামে এই ধরনের আইন পাস হলেও তা এখনো কার্যকর হয়নি। নেদারল্যান্ডসের কট্টর ডানপন্থী নেতারাও তাদের দেশে নেকাব ও বোরকা নিষিদ্ধের প্রস্তাব করেছেন। অবশ্য মুসলিম নেতারা নেকাব ও বোরকা পরা কিংবা তা আইন করে নিষিদ্ধ করা কোনোটাই সমর্থন করেননি। তাদের মতে, এটি ধর্মীয় অনুশাসন নয়, বরং সাংস্কৃতিক চর্চা।
0 আপনার মতামত:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।