লিবিয়া ছেড়ে আসা ৩৫ হাজার বাংলাদেশির কর্মসংস্থানে সরকারকে বিশেষ প্রকল্প হাতে নেয়ার সুপারিশ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধিরা। তাদের অভিযোগ, লিবিয়া ছেড়ে আসা হতভাগ্য এই মানুষদের দেয়া সরকারি ঘোষণার বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
সোমবার সিরডাপ মিলনায়তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রতিষ্ঠান রামরো আয়োজিত লিবিয়া ফেরত শ্রমিকদের পুনর্বাসন বিষয়ক এক সংলাপে বক্তারা এ সুপারিশের পাশাপাশি লিবিয়া ফেরত এসব লোকদের জীবন নিয়ে নানা আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন তারা।

জীবিকার তাগিদ বেশি থাকলেও যুদ্ধের মধ্যে পড়ে এ পর্যন্ত লিবিয়া ছেড়েছেন প্রায় ৩৫ হাজার বাংলাদেশি। নিরাপদে দেশে পৌঁছাতে পারলেও তাদের অনেকেই হয়েছেন একেবারে নিঃস্ব। লিবিয়া ফেরত এই মানুষদের পুনর্বাসন শুরুর আগে ডেটাবেস তৈরি এবং সুষ্ঠু পরিকল্পনা খুবই জরুরি বলে সংলাপে বক্তাদের আলোচনায় উঠে আসে।
অনুষ্ঠানে সিপিডির সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘শুনেছি- লিবিয়া ফেরত লোকদের সরকার তিনশ’ ডলারের মতো সহায়তা দেবে। সরকার তাদেরকে সহজ শর্তে ঋণও দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার এতো প্রতিশ্রুতি দিলেও আসলে কি করেছে তা দেশের একজন নাগরিক হিসাবে আমার জানার আগ্রহ আছে। তবে সরকারের ঘোষণার বাস্তব কার্যকারিতার একটি মূল্যায়ন হওয়া দরকার।’
দেবপ্রিয় বলেন, ‘লিবিয়া পরিস্থিতির কারণে শ্রমবাজারের অস্থিরতায় বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এজন্য নতুন নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টির বিষয়টি গ্ররুত্ব সহকারে ভাবতে হবে।’
আইন বিশেষজ্ঞ ড, শাহদীন মালিক বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে সরকারের করণীয় ঠিক করতে এখনই একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি দরকার। এজন্য সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে।’
বায়রার সাবেক সভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘যারা দেশে ফিরে এসেছেন তাদের ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর যারা এখনো লিবিয়ায় রয়ে গেছেন তারা যেন ফিরে না আসেন সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। ন্যূনতম হলেও তাদের জীবনের নিরাপত্তার বিষয়টি সরকারের চিন্তা করা দরকার।’
সংলাপে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও কর্মকর্তারা অবশ্য এই মাসেই বাংলাদেশে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক চালুর বিষয়ে আশ্বাস দেন। তারা বলেন, এই ব্যাংকের প্রথম প্রকল্প হবে লিবিয়া ফেরত বাংলাদেশিদের পুনর্বাসন করা।
এছাড়া সংলাপে অংশ নেয়া বিভিন্ন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে লিবিয়া ফেরত কর্মীদের পুনর্বাসনে বিশেষ প্রকল্প নেয়ার আশ্বাস দেন।
0 আপনার মতামত:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।