কে? কেভিন ও’ব্রায়েন? উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড? নাকি নিয়াল ও’ব্রায়েন? আগামীকাল মোহালিতে যখন আয়ারল্যান্ডের মুখোমুখি হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, কাকে সবচেয়ে বেশি ভয় পাবে ড্যারেন স্যামির দল? ফিল সিমন্সকে!
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ১৪৩টি ওয়ানডে খেলা এই সাবেক অলরাউন্ডার এখন আয়ারল্যান্ডের কোচ। আয়ারল্যান্ডের প্রেরণার উৎস। যে প্রেরণা নিয়ে আইরিশরা নতুন রূপকথা জন্ম দেওয়ার প্রত্যয় নিয়ে খেলছে এই বিশ্বকাপ।
ফিল সিমন্স
রূপকথার জন্ম আইরিশরা ২০০৭ বিশ্বকাপেই দিয়েছিল। ওই বিশ্বকাপের পর কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ান আড্রিয়ান বিরেল। এর পরই দায়িত্ব নেন ফ্রেঞ্চ-কাট দাড়ি আর শান্তসৌম্য চেহারার সিমন্স। চ্যালেঞ্জটা তাঁর জন্য ছিল আরও বড়। আগে আয়ারল্যান্ডকে নিয়ে প্রত্যাশা ছিল না। কিন্তু ২০০৭ বিশ্বকাপ সেটি পাল্টে দেয়। তা ছাড়া সিমন্স যে সময় দায়িত্ব নিয়েছেন, আয়ারল্যান্ড তখন দেখছে টেস্ট খেলার স্বপ্ন। টেস্ট স্ট্যাটাসের জন্য আইসিসির কাছে তারা আবেদনও করেছে।
এই বিশ্বকাপটা এই ৪৭ বছর বয়সীর জন্য ছিল আরও বড় চ্যালেঞ্জ। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে ২৭ রানে হেরে যাওয়ার পর একটু ধাক্কাই খেয়েছিলেন। কিন্তু পরের ম্যাচেই ইংল্যান্ডের ৩২৭ রান টপকে তাঁর দল এনে দেয় রেকর্ড গড়া এক জয়। গত ম্যাচেও ভারতকে ছেড়ে কথা কয়নি আইরিশরা। কোয়ার্টার ফাইনালের স্বপ্ন পূরণ করতে হলে কাল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাতে হবে। নিজের সাবেক দলের বিরুদ্ধে তাই ছক কষতে হচ্ছে সিমন্সকে।
বিশ্বকাপে ওয়ানডে অভিষেক, বিশ্বকাপেই শেষ ম্যাচ খেলা বিরল ক্রিকেটারদের একজন সিমন্স পারবেন? পারবেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুর্বল দিকগুলোতে মোক্ষম আঘাত হানতে? আইরিশদের আস্থা আছে তাঁর ওপর।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে স্মরণীয় সেই জয়ের পর দলে পেসার বয়ড র্যাঙ্কিন যেমন বলেছিলেন, এই জয়ের কৃতিত্ব সব সময়ই মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করে চলা সিমন্সের, ‘সিমন্স এমন একজন মানুষ, যিনি সব সময় নির্ভার থাকেন। এ ধরনের উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে কাজ করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত লোক তিনিই। সেদিন তিনি আমাদের বারবার আশ্বস্ত করে বলছিলেন, এই রান আমাদের পক্ষে তাড়া করে জেতা খুবই সম্ভব। আমরা বরং সহজেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।’
আজও দলকে এমন বার্তাই হয়তো দেবেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে প্রায় এক যুগ খেলা সিমন্স। যিনি নিজে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন, আয়ারল্যান্ডের এই দলটার পক্ষে আরও অনেক দূর যাওয়া সম্ভব, ‘আমাদের এই দলে ১২-১৩ জন পেশাদার ক্রিকেটার, গত বিশ্বকাপে যেখানে ছিল মাত্র তিনজন। তা ছাড়া এই দলে অভিজ্ঞতাও আছে। ২০১০ সালেই আমরা ৫৪টি ম্যাচ খেলেছি (যার ২১টি বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দলগুলোর বিপক্ষে)। এটা আমাদের জন্য এবার একটা বড় প্লাস পয়েন্ট।’
গতবারের তুলনায় এবারের সাফল্যটিকেও অনেক বড় করে দেখেন সিমন্স, ‘আমাদের বিপক্ষে দলগুলো এখন আঁটঘাট বেঁধেই মাঠে নামে। ফলে কোনো ম্যাচই আমাদের জন্য আর সহজ নয়। তারা এখন আমাদের বিপক্ষে সেভাবেই খেলে, যেন তারা খেলছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।’
আয়ারল্যান্ডকে ‘অস্ট্রেলিয়া’র মর্যাদা দেওয়াও তো অনেক বড় প্রাপ্তি! ওয়েবসাইট।
0 আপনার মতামত:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।