মৃত্যুঞ্জয়ী মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউছুফ। জন্ম চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের খরণদ্বীপ গ্রামে, ১৯৫৬ সালে। হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। নির্যাতিত হয়েছেন বোয়ালখালীর তৎ কালীন সার্কেল অফিসারের কার্যালয়সংলগ্ন এবং কালুরঘাটের উত্তর পাশের নির্যাতনকেন্দ্রে। দেখেছেন চেনা রাজাকারদের হাতে চার বন্দীর করুণ মৃত্যু। ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন তিনি। বিস্তারিত শুনিয়েছেন মুহাম্মদ শামসুল হককে।
১৯৭০ সালে কানুনগোপাড়া স্যার আশুতোষ কলেজে পড়ার সময় অধ্যাপক দিলীপ চৌধুরীর (মুক্তিযুদ্ধে শহীদ) সঙ্গে আমার পরিচয় এবং তাঁর হাতেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি। ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে ’৭০-এর নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী লীগের পক্ষে অংশ নিই। এতে আমার ওপর খেপে যান জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী, আমারই গ্রামের মাহফুজুল হক। সুযোগ খুঁজতে থাকেন আমার ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য। পঁচিশে মার্চের রাতে পাকিস্তানিদের গণহত্যা শুরুর প্রেক্ষাপটে স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হয়। নিজের করণীয় ঠিক করতে ২৭ মার্চ কলেজে গিয়ে জানতে পারলাম দিলীপ স্যার কালুরঘাট এলাকায় অবস্থান করছেন। সেখানে গিয়ে দেখি, একটি নারিকেলগাছের তলায় রাখা কয়েকটি টায়ারের ওপর মেজর (পরে মেজর জেনারেল ও রাষ্ট্রপতি) জিয়াউর রহমান ও দিলীপ স্যার বসা। তিনি আমাকে জানালেন, উসমানিয়া গ্লাস ফ্যাক্টরিতে তাঁরা ৬৫ জন পাকিস্তানি সৈন্যকে খতম করেছেন। প্রতিশোধ নিতে শিগগিরই পাকিস্তানি গানবোট এদিকে আসতে পারে। আমাকে নির্দেশ দিলেন, ‘গোমদণ্ডী বহদ্দারপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কিছু বাঙালি সৈনিক, ইপিআর ও পুলিশ অবস্থান করছে। তাদের জন্য খাদ্য সংগ্রহ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, বঙ্গবন্ধু যে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন, জনগণের মধ্যে তা প্রচার করতে হবে।’ আমি সাধ্যানুযায়ী দায়িত্ব পালন করি।
এপ্রিলের মাঝামাঝি সাবরুম হয়ে ভারতের বর্গা ক্যাম্পে গিয়ে সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ নিই। কিছু রাইফেল ও পিস্তল দিয়ে জুনের প্রথম দিকে আমাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় দেশে। এসেই দালাল রাজাকারদের বিরুদ্ধে অপারেশনে (অভিযান) অংশ নিয়েছি। ৩১ জুলাই রাজাকারেরা স্যার আশুতোষ কলেজে গিয়ে অধ্যক্ষ শান্তিময় খাস্তগীর ও তাঁর পাচক নারায়ণকে হত্যা করে। কলেজের অন্য বাড়িঘরও জ্বালিয়ে দিয়েছিল তারা। কয়েকজন অধ্যাপককে ধরে নিয়ে যায়।
একাত্তরের ২৬ আগস্ট সামরিক সরকার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নেয়। পরীক্ষার্থী ছিলাম আমিও। কেন্দ্র ছিল পটিয়ায়। অন্যদিকে পরীক্ষা বানচাল করা কিংবা কেন্দ্র এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত রাখার নির্দেশ ছিল আমাদের ওপর। সেই অনুসারে প্রথম দিন যথারীতি পটিয়া কলেজ কেন্দ্রে উপস্থিত হই। তখনো বুঝতে পারিনি যে, মাহফুজুল হক আমার গতিবিধি লক্ষ করছিলেন। হঠাৎ দেখি কলেজ ফটকে দুজন রাজাকার। তারা ধরে আমাকে একটি গাড়িতে তুলে নিল। গাড়ির ভেতর দৃষ্টি বুলিয়ে দু-তিন ফুট লম্বা একটি তলোয়ার দেখে মুহূর্তে আমার রক্ত হিম হয়ে আসে। গোমদণ্ডী হয়ে আমাকে বোয়ালখালী সার্কেল অফিসারের কার্যালয়সংলগ্ন (বর্তমানে যেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়) একটি ঘরে নিয়ে বন্দী করে রাখা হয়। সেটি ছিল রাজাকার-হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প তথা নির্যাতনকেন্দ্র। সেখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে আনা আরও লোকজন ছিল। রাজাকারেরা আমার কাছে জানতে চায় দিলীপ চৌধুরী কোথায়। আমি জানি না বললে নেমে আসে নির্যাতন। একসময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। জ্ঞান ফিরলে দেখি সমস্ত শরীর ফোলা ও ব্যথা। সেখানে ২৬ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আটকে রেখে নির্যাতন চালানো হয়। প্রতিদিনই আনা নতুন নতুন বন্দীদের ওপরও নির্যাতন চলত একইভাবে। রাত ১২টার দিকে রাজাকার কমান্ডারেরা এসে কয়েকজনকে নিয়ে যেত যাঁরা আর কখনো ফিরে আসতেন না। নেওয়ার কিছুক্ষণ পর শুনতে পেতাম গুলির আওয়াজ। তাই টর্চের আলো ফেলে রাজাকার কমান্ডারেরা ঘরে ঢুকতে দেখলেই আল্লাহর নাম নিয়ে কালেমা পড়তে পড়তে গুনতাম মৃত্যুর প্রহর। ২৮ আগস্ট মুক্তিযোদ্ধা ওয়াজেদ, বেবী, ফজলু রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করে আমাদের মুক্ত করার চেষ্টা চালান। কিন্তু পাঞ্জাবি ও রাজাকারদের ভারী অস্ত্রের আক্রমণে তিনজনই শহীদ হন। রাজাকাররা তাঁদের রক্ত কুকুরকে খেতে দিয়েছিল।
২ সেপ্টেম্বর তিন রাজাকার আসে দিনের বেলা। তারা আমি, চৌধুরীহাটের মুদির দোকানদার ইউনুস সওদাগর, হাবিব ব্যাংকের দারোয়ান সৈয়দুল আলম (পশ্চিম কধুরখীল), পশ্চিম গোমদণ্ডীর এক ভিখারিনির ছেলে চরাইয়া এবং আমার গ্রামের এক হিন্দু রাখালকে গোমদণ্ডী স্টেশনে নিয়ে ট্রেনে তোলে। প্রহরী রাজাকারদের মধ্যে ছিল জামায়াত নেতা জাকের ও অন্য দুই কর্মী। তারা আমাদের পটিয়া আর্মি ক্যাম্প হয়ে কালুরঘাট সেতুর পূর্বপ্রান্তে পেট্রল পাম্প এলাকা ঘুরিয়ে আবারও নিয়ে যায় গোমদণ্ডীর সেই নির্যাতনকেন্দ্রে। সন্ধ্যায় আমাদের সবার হাত রশি দিয়ে বেঁধে নিয়ে যায় কালুরঘাট সেতুর পশ্চিম দিকে। সেখানে ছড়ি হাতে ছিল জামায়াত নেতা রেজাউল আকবরী। আমরা যাওয়ার সময় আমাদের পাশ দিয়ে যাওয়া এক পথচারীকে আমি সালাম দিলে আকবরী আমাকে গালি দিয়ে বলেন, ‘তুই তো হিন্দু। তুই সালাম দিবি কেন?’ ভয়ে চুপ থাকি। রাত আটটার দিকে এক পাকিস্তানি সেনা এসে জানতে চান, আমরা ভাত খাব কি না? খিদের জ্বালায় অস্থির আমরা। সবাই বললাম, ‘খাব।’ আমাদের চারজনকে প্লেটে এবং রাখাল ছেলেটিকে গাছের পাতায় করে পান্তাভাত এনে দেওয়া হয় কোনো তরকারি ছাড়া।
খাওয়া শেষে আমাদের নেওয়া হয় সেতুর পূর্ব প্রান্তে। সেতুর মাঝখানে আসার পর বিপরীত দিক থেকে আসা এক লোক জানতে চান এখানে স্যার আশুতোষ কলেজের ছাত্র কে? আমি পরিচয় দিলে লোকটিও আর কিছু না বলে আমাদের সঙ্গে সেতুর পূর্ব পাড়ে যান। রেললাইনের ডান দিকে একটি কলাবাগানের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের পাশের একটা ঘরে নিয়ে প্রত্যেকের হাত পিছমোড়া বেঁধে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়।
কিছুক্ষণ পর সৈয়দুল আলম হঠাৎ কালেমা পড়া শুরু করেন। আমাদেরও বললেন একইভাবে কালেমা পড়তে। তাঁর ধারণা, আজই আমাদের হত্যা করা হবে। আমরা সবাই কালেমা পড়ে মনে মনে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হতে থাকি। এমন সময় একজন এসে আমাকে নিয়ে যায় পাশের কক্ষে। সেখানে দেখি এক পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তার পাশে অস্ত্র হাতে ইমামনগরের বাসিন্দা রাজাকার আবদুল মালেক। একসময় ছিল রিকশাচালক। সেনা কর্মকর্তার কাছে আমি প্রাণভিক্ষা চাইলে বলল, ‘রাত ১২টায় তোমার আবেদন মঞ্জুর করা হবে।’ এরপর আবার চার বন্দীর কাছে নিয়ে বেঁধে রাখা হয় আমাকে।
এদিকে দড়ির বাঁধনে দুহাতে যন্ত্রণা করায় আমি এপাশ-ওপাশ করছিলাম। একপর্যায়ে আমার হাতের বাঁধন হালকা হয়ে গেলে মনে মনে পালিয়ে যাওয়ার ফন্দি করি। রাত ১২টায় এল তিন রাজাকার। আমি হাত দুটো পেছনে এমনভাবে রাখি যাতে বাঁধন হালকা হওয়ার বিষয়টি বোঝা না যায়। রাজাকারেরা আমাদের পানি এনে খাওয়ায়। এ সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই এক রাজাকার জাপটা মেরে আমার পরনের লুঙ্গি খুলে নিয়ে ছিঁড়ে টুকরা করে তা দিয়ে বেঁধে ফেলে সবার চোখ। চোখ বাঁধা অবস্থায় শুনি ধস্তাধস্তির শব্দ। আমি পাশের দেয়ালে মুখ ঘষতে ঘষতে চোখের বাঁধন হালকা করে দেখি ভয়ঙ্কর দৃশ্য। এক রাজাকার মাটিতে সৈয়দুল আলমের মাথা আরেকজন চেপে ধরেছে দুই পা। আর তাঁকে তলোয়ার দিয়ে জবাই করছে মালেক। সৈয়দুল তাঁর সন্তানদের কথা উল্লেখ করে রাজাকারদের কাছে প্রাণভিক্ষা চাইলেও পাষণ্ডরা কিছুতেই শুনল না। তাঁর গোঙানির শব্দ শুনে রাজাকারেরা রাইফেলের বাঁট দিয়ে বুকে আঘাত হেনে মৃত্যু নিশ্চিত করে। তারপর গামছা দিয়ে পেঁচিয়ে টেনে বাইরে নিয়ে যায় লাশ।
এ ঘটনা দেখে আমরাও বিচলিত হয়ে রাজাকারদের অনুরোধ করি আমাদেরও যেন গুলি করে হত্যা করা হয়। তাঁরা আমাদের ঘর থেকে বের করে খালের পাশে নিয়ে দাঁড় করায়। খালে তখন প্রবল স্রোত। আমাদের ধাক্কা মেরে খালের ভেতর ফেলেই গুলি ছোড়ে তারা। আগেই আমি হাত বাঁধনমুক্ত করে রশি ধরে রেখেছিলাম। পানিতে পড়েই ডুব দিয়ে ভাটির টানে সাঁতরে অনেক দূর চলে গিয়ে ভাগ্যক্রমে আমি বেঁচে গেলেও শহীদ হন বাকি তিন বন্দী। স্রোতের টানে কিছু দূর গিয়ে একসময় নিজেকে আবিষ্কার করি ডাঙায়। প্রাণের ভয়ে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে দিগম্বর অবস্থায় হাঁটতে থাকি সামনের দিকে।
একসময় একটি হারিকেনের আলো দেখে কাছে গিয়ে দেখি একটা তাঁবুতে কয়েকজন লোক ধানখেত পাহারা দিচ্ছেন। তাঁরা আমাকে কাপড়-চোপড় দিয়ে সাহায্য করে সকালে কাছের একটি চায়ের দোকানে পৌঁছে দেন। দোকানদার ওঁদের কথা শুনে আমাকে চা-নাশতা খাওয়ান। তাঁর কাছ থেকে একটা সিকি (চার আনা) চেয়ে নিয়ে নদীতীরে এসে একজন সাম্পানওয়ালাকে অনুরোধ করি আমাকে নদীর পশ্চিম তীরে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তিনি আমাকে অনেকটা উজানে নামিয়ে দেন। তাঁর পরামর্শে প্রথমে পেটান শাহের মাজারে, পরে সেখান থেকে গিয়ে আশ্রয় নিই কধুরখীল গ্রামে আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক (সৈয়দপুর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক) গোপাল মজুমদারের বাড়িতে। তাঁর মা-বোনেরা আমরা শুশ্রূষা করেন। খবর পেয়ে আমার বাবা এসে আমাকে নিয়ে যান। কিন্তু বাড়িতে থাকা নিরাপদ নয় ভেবে কয়েকদিন পরই কর্ণফুলী পেরিয়ে চলে যাই রাউজানের বাগোয়ান গ্রামে। কয়েকদিন পর সেখানেও নিরাপদ নয় মনে করে আবার বাড়িতে এসে কিছুদিন আত্মীয়-স্বজন এবং গরিব কৃষক নুরুল ইসলামের বাড়িতে থাকার পর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মানের পরামর্শে আরেকটি দলের (গ্রুপ) সদস্য হিসেবে ভারতে যাই। সেখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে ভারতের বগা পাহাড়ের ভেতর দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে ঢোকার সময় গভীর অরণ্যে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে আহত হই। এ সময় এক সহযোদ্ধার একটি হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
স্বাধীনতার পর আমি চিহ্নিত কয়েকজন রাজাকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলাম। কিন্তু কয়েকদিন পর দেখলাম প্রধান দুজন আসামিই মামলার তালিকা থেকে বাদ পড়ে গেছে। এতে আমি হতাশ হই। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকার প্রতিমাসে আমাকে ২৫০ টাকা ভাতা দিত। পাঁচ হাজার টাকা এককালীন সাহায্য পাই মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে। কিন্তু পরবর্তীকালে স্বাধীন দেশের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিজেকে নিরাপদ মনে হয়নি। প্রতিনিয়তই মনে হচ্ছিল আমাকে মারার জন্য নীরবে তাড়া করছে কিছু পাকিস্তানি দোসর। একপর্যায়ে চলে যাই ব্রাজিলে। একজন মৃত্যুঞ্জয়ী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমাকে ভিসা পেতে সহযোগিতা করেন তৎ কালীন ব্রাজিলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এয়ার কমোডর মঈনুল ইসলাম। পরে ব্রাজিল থেকে কানাডায় গিয়ে প্রতিষ্ঠিত হলেও দেশের টানে কিছুদিন পর পর এসে যেটুকু পারি এলাকার দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াই। আমার একমাত্র ইচ্ছে দুঃখী মানুষের সেবা করা।
বিষয় সমুহ...
বিভাগীও শহর তথ্য কনিকা

আরো কিছু গুরুত্তপূর্ণ বিষয়...
মৃত্যুর মুখ থেকে ফেরা এক মুক্তিযোদ্ধার জবানবন্দি
রবিবার, ১৩ মার্চ, ২০১১অন্তরভুক্ত বিষয় ইতিহাস
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 আপনার মতামত:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।