জাপানের তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্রেও

মঙ্গলবার, ১৫ মার্চ, ২০১১

জাপানের ফুকুশিমায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিস্ফোরণের কারণে সৃষ্ট তেজস্ক্রিয়তা জাপান ছাড়িয়ে খোদ যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। এক মার্কিন পরমাণু বিশেষজ্ঞ গতকাল সোমবার এ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে এক দুর্গত
ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে এক দুর্গত

সুনামি ও ভূমিকম্পের ফলে জাপানের ফুকুশিমায় অবস্থিত দাইচি ও দাইনি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দুটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কেন্দ্র দুটির শীতলীকরণ ব্যবস্থা ভেঙে যায়। এতে করে কেন্দ্র দুটিতে প্রচণ্ড তাপ ও চাপের সৃষ্টি হয়। এ কারণে গত রোববার দাইচি পারমাণবিক কেন্দ্রের ১ নম্বর চুল্লিতে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটে। পরদিন সোমবার ওই কেন্দ্রের ৩ নম্বর চুল্লিতেও বিস্ফোরণ ঘটে।
গতকাল ফক্স নিউজ সানডের টেলিভিশন অনুষ্ঠানে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সময় মার্কিন পরমাণু বিশেষজ্ঞ জোসেফ সারনিয়ন বলেন, জাপানের পরমাণু সংকট এখন একটা জটিল পর্যায়ে আছে। দাইচি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের তিনটি চুল্লিই এখন বিপজ্জনক ।
জোসেফ জানান, সবচেয়ে বিপজ্জনক হলো জ্বালানি রডগুলো পুরোপুরি অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এ কারণে সেখানে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হচ্ছে। এই তাপে চুল্লিগুলো পুরোপুরি গলে যেতে পারে। এটি হলে সেখান থেকে সৃষ্ট তেজস্ক্রিয়তা মাটি, পানি ও বায়ুর সাহায্যে জাপান ছাড়িয়ে পুরো প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমনকি এ তেজস্ক্রিয়তা খোদ যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
ওয়াশিংটনে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইচিরো ফুজিসাকাইও তেজস্ক্রিয়তার বিপদের কথা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি জানান, চুল্লিগুলো খুব শিগগিরই গলে যাওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। তিনি আরও বলেন, এটা সত্য যে, চুল্লিগুলোর কিছু জ্বালানি রড হয় অকার্যকর হয়ে গেছে, না হয় গলে গেছে। তবে পুরো চুল্লিগুলো গলে যাওয়ার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়নি।
এনবিসির মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে জাপানের রাষ্ট্রদূত ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক জ্বালানি সংস্থার প্রধান মারভিন ফাটেল উপস্থিত ছিলেন। তিনি পরমাণু সংকট মোকাবিলায় জাপানি বিশেষজ্ঞদের দক্ষতার প্রশংসা করেন।
সংকট মোকাবিলায় দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্টারি কমিটির বৈঠক: এদিকে স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্প ও সুনামির ঘটনায় সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবিলায় দক্ষিণ কোরিয়ায় চারটি পার্লামেন্টারি কমিটির জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রাজধানী সিউলে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিস্ফোরণের ঘটনায় তেজস্ক্রিয়তার প্রভাব নিয়ে আলোচনা করে বিজ্ঞানবিষয়ক একটি কমিটি। ফুকুশিমার ওই পারমাণবিক কেন্দ্রটি কোরীয় উপদ্বীপ থেকে এক হাজার কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। গতকাল দক্ষিণ কোরিয়া ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার সেফটির এক কর্মকর্তা জানান, বায়ু এখনো পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। বায়ুপ্রবাহের দিক পরিবর্তিত হলেও কোরীয় উপদ্বীপে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না।
দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি তথ্যমতে, দেশটিতে বর্তমানে ২১টি পারমাণবিক চুল্লি রয়েছে। ২০২৪ সাল নাগাদ আরও ১৪টি চুল্লি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে সরকার।
অপর তিনটি কমিটি সাহায্য, স্থানীয় পারমাণবিক শক্তি কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতিতে জাপানের ভূমিকম্প ও সুনামির ঘটনার নেতিবাচক প্রভাব হ্রাস করতে কী করণীয়, তা নিয়ে আলোচনা করে। রয়টার্স।

0 আপনার মতামত:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।

Avro Keyboard - Unicode Compliant FREE Bangla Typing Softwareবাংলা লিখার সপ্টওয়্যার আভ্র ডাউনলোড করতে খানে ক্লিক করুন
 
 
 

বিশাল বাংলা

কম্পিউটার প্রতিদিন

রাজনীতি...

বিনোদন

খেলার খবর

অর্থ ও বাণিজ্য