আমাদের কাছে এটিও বড় ম্যাচ

সোমবার, ১৪ মার্চ, ২০১১

হল্যান্ডের বিপক্ষে আমরা একটা ম্যাচই খেলেছি। সেই ম্যাচে আমরা হেরেছিলাম এবং হারের কারণ ছিল বাজে ফিল্ডিং। মনে পড়ছে কাভারে দুটি এবং ডিপ মিড উইকেটে একটি ক্যাচ ফেলেছিলাম আমরা। এই সুযোগ ওরা ষোলোআনা কাজে লাগিয়েছিল। ৩০ ওভারের ম্যাচে আমাদের ব্যাটিং খারাপ না হলেও ফিল্ডিংই সব শেষ করে দেয়। অধিনায়ক হিসেবে দিনটা খারাপ কেটেছিল আমার। এটা অবশ্য নতুন কিছু নয়। এমন বাজে অভিজ্ঞতা অনেকবারই হয়েছে।

মাশরাফি বিন মুর্তজা
মাশরাফি বিন মুর্তজা

তখন হল্যান্ড ছিল আমাদের কাছে অচেনা প্রতিপক্ষ। এখনো যে পুরোপুরি চেনা, তা-ও নয়। এই বিশ্বকাপেই ওদের যা একটু দেখছি এবং তা থেকেই ধারণা পাচ্ছি। ওদের খেলোয়াড়দের তেমন চিনিও না। রায়ান টেন ডেসকাটের নামটা কাগজে আসছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করার পর। সে বেশ ভালো খেলোয়াড়। আরও দু-একজন ভালো খেলোয়াড় আছে। ওদের বাঁহাতি স্পিনার পিটার সিলারকে আমার ভালো লেগেছে। নজরকাড়া খেলোয়াড় আর তেমন নেই।
তাই বলে ডাচদের হালকা করে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ক্রিকেটে নির্দিষ্ট দিনে জ্বলে উঠে যেকোনো দল জিততে পারে। এর প্রমাণ বহুবার পেয়েছি। কাজেই হল্যান্ডের বিপক্ষে সহজে জিতে যাব, এটা ভাবা ঠিক হবে না। খুবই গুরুত্বের সঙ্গে ম্যাচটা নেওয়া উচিত আমাদের। বড় প্রতিপক্ষকে যেভাবে নিই, ঠিক সেভাবেই। তবে দুশ্চিন্তায় ভোগার দরকার নেই। সর্বোপরি বলব, আজ আমরাই ফেবারিট। এখন মাঠে ফেবারিটের মর্যাদা রক্ষার পারফরম্যান্স চাই।
সেটি না হওয়ার কারণ দেখছি না। কন্ডিশন এবার আমাদের পক্ষে। হল্যান্ডের কাছে আমরা হেরেছিলাম স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে। ওখানকার কন্ডিশন কাজে লাগিয়েছিল ডাচরা। কিন্তু আমাদের কন্ডিশনে খেলা ওদের জন্য কঠিন। ঢাকার উইকেটের চেয়ে চট্টগ্রামের উইকেট বেশি স্লো। আমার ধারণা, আজ আমাদের স্পিনাররা কঠিন পরীক্ষায় ফেলবে ডাচদের। স্পিন আক্রমণের সামনে কতটা লড়তে পারে ডাচরা, সেটিই হবে দেখার।
কন্ডিশনের সঙ্গে যোগ করুন আত্মবিশ্বাস। দুই দুইয়ে চার হলে তো কথাই নাই। মঞ্চ প্রস্তুত। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বাংলাদেশ দল এখন বেশ উজ্জীবিত। এই উজ্জীবনী শক্তিটা খুব দরকার। আমাদের বিপক্ষে ইংলিশদের একটু যেন আত্মবিশ্বাস হারানো দল মনে হয়েছিল। অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসের ম্যাচ-পূর্ব কথাবার্তায় সেটি বোঝা গেছে। শেষ পর্যন্ত সেটির প্রভাব ম্যাচে দেখেছি। কাজেই আজ আত্মবিশ্বাসী এক দল হয়েই খেলতে হবে সাকিবদের।
আত্মবিশ্বাসটা একটু বেশি মাত্রায় চাই পেসারদের কাছ থেকে। লক্ষ্য করুন, আগের ম্যাচগুলোয় আমাদের পেসাররা ব্রেক থ্রু দিতে পারেনি। এটা খুব দরকার। শফিউল একটা ম্যাচে শেষ দিকে উইকেট তুলেছে, কিন্তু শুরুতে ব্রেক থ্রুটা আসেনি। এই মাচে আমি চাইব, আমাদের পেসাররা খুব ভালো করুক।
ম্যাচটা হচ্ছে দিনে। সকালে উইকেটে পেসারদের জন্য কিছু না-কিছু থাকেই। আগে বল করলে চাইব আমাদের পেসাররা দলকে ভালো একটা সূচনা এনে দিক। পেসাররা ভালো করলে স্পিনারদের কাজটা সহজ হয়ে যায়। যদি দেখা গেল পেসাররা সুবিধা করতে পারছে না, তখন তো স্পিন আছেই। সে ক্ষেত্রে সাকিব তার আগের ম্যাচের পরিকল্পনায় যেতে পারে। রাজ্জাককে বোলিংয়ে আনল। এরপর নাঈম আছে, সাকিব নিজে তো থাকছেই।
বোলিং ভালো হোক চাই, কিন্তু ব্যাটিং? ব্যাটিং নিয়ে তো অনেক ভাবার আছে। ভারত ম্যাচটা বাদ দিলে বাকি ম্যাচগুলোয় ব্যাটিং প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি। ব্যাটিং ভালো হতে হবে এটা হচ্ছে ম্যাচ জয়ের অন্যতম পূর্বশর্ত। আমাদের খেলোয়াড়দের সামনে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সটা ভালো করার একটা সুযোগ থাকছে এই ম্যাচে। কেউ ৫ উইকেট নিল, কেউ সেঞ্চুরি করল। সেটি পারলে তাদের ক্যারিয়ারে জন্যই বড় অর্জন হবে। তাই চাইব, প্রতিটি খেলোয়াড় জ্বলে উঠুক।
এটা কি আমাদের জন্য প্রতিশোধের ম্যাচ? ডাচদের বিপক্ষে একমাত্র সাক্ষাতে আমরা হেরেছিলাম বলে আজ এক অর্থে প্রতিশোধের ম্যাচ তো বটেই। তবে প্রতিশোধ শব্দটা মনে আনছি না আমি। বিশ্বকাপে টিকে থাকার জন্য আমাদের জয় দরকার, তাই এটিকে বড় ম্যাচ হিসেবেই দেখা উচিত।
এরপর সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা। কে জানে আমরা ওদেরও হারাব না! গত বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছি। সুতরাং এবারও সম্ভব। তার আগে আজ জয়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি, আমরা জিতব।

0 আপনার মতামত:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।

Avro Keyboard - Unicode Compliant FREE Bangla Typing Softwareবাংলা লিখার সপ্টওয়্যার আভ্র ডাউনলোড করতে খানে ক্লিক করুন
 
 
 

বিশাল বাংলা

কম্পিউটার প্রতিদিন

রাজনীতি...

বিনোদন

খেলার খবর

অর্থ ও বাণিজ্য