চাষিদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় গড়ে ওঠা বগুড়ার সেই চাষিবাজার এখন ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে। রাতে এখন সেখানে গাঁজা, ফেনসিডিল ও মদের কেনাবেচা হয়। জায়গা খালি পড়ে থাকায় গড়ে তোলা হয়েছে সিএনজি অটোরিকশার স্ট্যান্ড। আর চাষি বাজারের এক পাশে শুধু মাছের পাইকারি বাজারটি টিকে আছে। অথচ এই বাজারের জন্য প্রায় ১৮ লাখ টাকা ব্যয় করেছিল বগুড়া পৌরসভা। বর্তমান পৌর মেয়র বলেন, পুরো টাকাটাই জলে গেছে। আর পুলিশ বলছে, চার-পাঁচ দিন আগে অভিযান চালানোর পর এখন আর সেখানে মাদকের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের দেখা যায় না।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, দেশে জরুরি অবস্থা জারির পর বগুড়া শহরের পাইকারি কাঁচাবাজারের আড়ৎ রাজাবাজারের বিকল্প হিসেবে চেলোপাড়া মৌজায় করতোয়া নদীসংলগ্ন প্রায় আড়াই একর জমিতে গড়ে তোলা হয় চাষিবাজার। সেখানে পৌরসভার টাকায় মাটি ভরাট, নালা ও রাস্তা নির্মাণ এবং বাঁশ দিয়ে টিনের ঘর করে দেওয়া হয়। এ ছাড়াও চাষিবাজার থেকে সহজেই ফতেহআলীবাজারে যাওয়ার জন্য করতোয়া নদীর ওপর একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়।
বগুড়া পৌরসভার বর্তমান মেয়র তখন একটি মামলায় গ্রেপ্তার হলে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে তৎকালীন ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনোয়ারুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁর সময়েই এই চাষিবাজারের পেছনে লাখ লাখ টাকা ব্যয় হয়। ফলাও করে প্রচার করা হয় চাষিবাজারের কথা। কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই বাজার ক্রেতা-বিক্রেতা শূন্য হয়ে পড়ে। সেখানে তৈরি করা টিনের ঘরগুলো উধাও হয়ে যায়।
সরেজমিন গতকাল বৃহস্পতিবার চাষিবাজারে দেখা যায়, বাজারের বেশির ভাগ এলাকাজুড়ে ময়লা-আবর্জনা। এক পাশে ২০ থেকে ২২টি মাছের আড়ৎ। বেশ কিছু সিএনজিচালিত অটোরিকশা সেখানে রাখা হয়েছে। স্থানীয় লোকজন জানান, রাতের বেলা এখানে মাদক বিক্রিসহ নানা অপরাধমূলক কাজ হয়ে থাকে। ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে দুর্গন্ধে এলাকার লোকজনের চরম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। পৌরসভার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত মেয়র আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, তখন যৌথ বাহিনী তাঁদের দিয়ে কাজ করিয়ে নিয়েছে। সঠিকভাবে টাকা খরচ করা হয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি।
বগুড়া পৌরসভার মেয়র মাহবুবর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর অবর্তমানে সে সময় ওই বাজারের নামে প্রায় ১৮ লাখ টাকা খরচ করা হয়েছে। কী কাজ হয়েছে, তা তখনকার ভারপ্রাপ্ত মেয়র বলতে পারবেন। তবে চাষিবাজারের এই জায়গাটি পৌরসভার নিজস্ব নয়। রেলের কাছ থেকেও ইজারা নেওয়া হয়নি। যে টাকা ওই বাজারের নামে ব্যয় হয়েছে, তার পুরোটাই জলে গেছে। রেলওয়ে বিভাগ থেকে মাছের আড়ৎদারদের জমি ইজারা দেওয়া হয়েছে। যেহেতু জমি পৌরসভার নয়, সে জন্য তাঁরা সেখানে আর কিছু করতে পারছেন না বলে জানান পৌর মেয়র।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম খালেকুজ্জামান বলেন, এখন আর সেখানে মাদক কেনাবেচা হয় না। চার-পাঁচ দিন আগে সেখান থেকে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত বুধবার রাতেও পুলিশ সেখানে গিয়ে কাউকে পায়নি।
বিষয় সমুহ...
বিভাগীও শহর তথ্য কনিকা
আরো কিছু গুরুত্তপূর্ণ বিষয়...
চাষিবাজার এখন ‘মাদকের হাট’!
শনিবার, ১২ মার্চ, ২০১১অন্তরভুক্ত বিষয় বিশাল বাংলা
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 আপনার মতামত:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।