শেয়ারবাজার ধসের দায়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে।
‘বিপর্যস্ত শেয়ারবাজার: ব্যর্থ সরকার’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান বিরোধী দল বিএনপির নেতারা গতকাল শনিবার এ দাবি করেন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সম্মেলনকক্ষে গ্রুপ-২০০৯ নামে একটি সংগঠন আলোচনা সভার আয়োজন করে।
এতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে, তখনই শেয়ারবাজারে ধস নামে। আর দেশের অর্থনীতি নিম্নমুখী হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক এ বিপর্যয়ে ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে রাস্তায় বসে গেছে। তবে সামগ্রিকভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের অর্থনীতি।
তাঁর মতে, শেয়ারবাজারে ধস ও মুহাম্মদ ইউনূসকে আঘাত করা দেশের অর্থনীতিকে আঘাত করার শামিল। এর অর্থ দেশের অর্থনীতিকে সুদৃঢ় অবস্থায় দাঁড়াতে না দেওয়া।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান বলেন, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন, সাধারণ মানুষের সঞ্চিত অর্থ ছিনিয়ে নিয়ে তাদের সর্বস্বান্ত করে দলের কয়েকজনের কাছে সেই অর্থ তুলে দেওয়া হচ্ছে।
মঈন খান আরও বলেন, ভারতে মুম্বাইতে শেয়ার কেলেঙ্কারির কারণে তৎ কালীন অর্থমন্ত্রী পদত্যাগ করেছিলেন। একই ভাবে এ দেশের অর্থমন্ত্রীরও উচিত শেয়ার কেলেঙ্কারির দায় নিয়ে পদত্যাগ করা। কিন্তু তিনি পদত্যাগ না করে দায়দায়িত্ব অন্যের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন।
মঈন খানের মতে, অর্থমন্ত্রী বিনিয়োগকারীদের ফাটকাবাজ বলে দায়দায়িত্ব উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাচ্ছেন। তিনি জনগণকে ধোঁকা না দিয়ে দেশের উন্নতির লক্ষ্যে সরকারকে কাজ করার আহ্বান জানান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক বিপর্যয়কে স্বাধীনতার পর সবচেয়ে ভয়াবহ বলে অভিহিত করেন।
তিনি বলেন, শেয়ারবাজার যেকোনো দেশের অর্থনীতির বড় একটি চালিকাশক্তি। যারা সরাসরি বড় বড় প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করতে পারে না, তারা শেয়ারবাজারের মাধ্যমে ওই সব প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করে থাকে। একই সঙ্গে সেখান থেকে মুনাফা অর্জন করে।
আমীর খসরু বুক বিল্ডিং ও সরাসরি তালিকাভুক্তির বিষয়টির সমালোচনা করে বলেন, কারসাজির মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে। এর দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে।
অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারে বিপর্যয় ঘটানোর প্রক্রিয়া অনেক আগেই শুরু হয়েছে। সম্প্রতি এর ফল দেখা গেছে।
আবু আহমেদ আরও বলেন, বিনিয়োগকারীরা কেন চোখের পানি ফেলছে, কেন তারা বিক্ষোভ করছে, তা সরকারের বোঝা উচিত। তিনি এ বিপর্যয়ের জন্য সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনসহ (এসইসি) বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে দায়ী করেন।
বেসরকারীকরণ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরী পুঁজিবাজারে বিপর্যয়ের পেছনে বাইরের দেশের জড়িত থাকার অভিযোগ আনেন। তিনি এজন্য দেশবাসীকে আরও সতর্ক হয়ে একসঙ্গে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গ্রুপ-২০০৯-এর সদস্য মহসীন কবীর। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম।
বিষয় সমুহ...
বিভাগীও শহর তথ্য কনিকা
আরো কিছু গুরুত্তপূর্ণ বিষয়...
আলোচনা সভায় বিএনপির নেতাদের দাবি শেয়ারবাজারের বিপর্যয়ের জন্য অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত
রবিবার, ১৩ মার্চ, ২০১১
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 আপনার মতামত:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।