স্বাধীনতার ৪০ বছর পর মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের কবরের সন্ধান পেয়েছেন মা আবেদা খাতুন। ওই শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নাম আবুল কাশেম। তিনি কুমিল্লার তিতাস উপজেলার দক্ষিণ আকালিয়া গ্রামের মনিরুল হক শিকদারের দ্বিতীয় ছেলে। সম্প্রতি তাঁর কবর শনাক্ত করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় কাশেম ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের এমএসসি শেষ বর্ষের ছাত্র। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে সেই সময় তিনি প্রশিক্ষণের জন্য ভারত চলে যান। প্রশিক্ষণ শেষে দেশে এসে তিনি দাউদকান্দি ও হোমনা উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের দায়িত্ব পান।
১৯৭১ সালের ২ নভেম্বর রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে তিনি ধরা পড়েন। প্রায় এক মাস নির্যাতনের পরও কাশেমের কাছ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে কোনো তথ্য সংগ্রহ করতে না পেরে ২ ডিসেম্বর কসবা কেল্লাপাথর এলাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাঁকে হত্যা করে সালদা নদীতে লাশটি ফেলে দেয়। পরে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা আবদুল করিম লাশটি তুলে ৫৩ জন মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে সেটি দাফন করেন। এরপর তিনি প্রত্যেকের সমাধিতে নাম-ঠিকানা লিখে রাখেন। আবুল কাশেমের পরিবার তা জানত না।
চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি বেসরকারি টিভি চ্যানেল বাংলাভিশনে ওই সমাধিস্থল নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। ওই প্রতিবেদনের সূত্র ধরে আবুল কাশেমের পরিবার সমাধিস্থলের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। কবরের গায়ে কাশেমের বাড়ি দাউদকান্দির স্থলে হোমনা উপজেলা লেখা থাকায় সেটি শনাক্ত করতে দেরি হয়। শেষ পর্যন্ত গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সমাধিস্থলের ১৭ নম্বর কবরটি কাশেমের বলে তাঁর পরিবার শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। কাশেমের মা আবেদা খাতুন বলেন, ‘সন্তানকে হারিয়ে দীর্ঘ ৪০ বছর যে ব্যথা নিয়ে কাটিয়েছি, কবরের সন্ধান পেয়ে সে ব্যথাটা যেন নতুন করে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সান্ত্বনা একটাই, আমার ছেলে দেশের জন্য যুদ্ধ করে প্রাণ দিয়েছে, আমি একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার মা।’
মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেমের পরিবার এখন তিতাস উপজেলায় বসবাস করে। দাউদকান্দি উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন নিয়ে ২০০৪ সালের শুরুতে তিতাস উপজেলা গঠিত হয়।
বিষয় সমুহ...
বিভাগীও শহর তথ্য কনিকা
আরো কিছু গুরুত্তপূর্ণ বিষয়...
৪০ বছর পর মুক্তিযোদ্ধা ছেলের কবরের সন্ধান পেলেন মা
শুক্রবার, ২৫ মার্চ, ২০১১অন্তরভুক্ত বিষয় মুক্তি যুদ্ধ
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 আপনার মতামত:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।