কর্নেল তাহের হত্যা মামলার রায় উদ্ধৃত করে জাসদের সাংসদ হাসানুল হক ইনুর দেওয়া বক্তব্যকে কেন্দ্র করে আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রচণ্ড হইচই ও হট্টগোল করে বিরোধী দল বিএনপি। ইনু আদালতের রায়ের বরাত দিয়ে জিয়াউর রহমানকে ঠান্ডা মাথার খুনি বললে তাঁর প্রতিবাদে বিরোধী দল ওয়াকআউট করে। তবে তার আগেই স্পিকার আবদুল হামিদ ‘খুনি’ শব্দটি কার্য বিবরণী থেকে বাদ দেওয়ার ঘোষণা দেন।
বেগম খালেদা জিয়া
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় এই হট্টগোল ঘটে। অধিবেশন কক্ষ ত্যাগের আগে বিরোধীদলীয় সাংসদদের মুহুর্মুহু স্লোগান ও টেবিল চাপড়ানোর ঘটনায় অধিবেশন কক্ষে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। এ সময় কয়েকজন সাংসদ তাঁদের হাতের ফাইলও ছুড়ে মারেন। সাতটা ১৮ মিনিটে বিরোধী দল ওয়াকআউট করে। তবে ২০ মিনিট পর তারা আবার অধিবেশন কক্ষে ফিরে আসে।
হাসানুল হক ইনু রাষ্ট্রপতির ভাষণ সম্পর্কে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনার শুরুতেই বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) হাইকোর্ট একটি ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন। কর্নেল তাহের হত্যা মামলার রায় দিয়েছেন। রায়ে আদালত জিয়াউর রহমানকে ঠান্ডা মাথার খুনি বলে উল্লেখ করেছেন।’ এ সময় বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক দাঁড়িয়ে শূন্যে ফাইল ছুড়ে মারেন। তিনি উত্তেজিত ভঙ্গিতে ইনুর বক্তব্য সম্পর্কে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন। স্পিকার তাত্ক্ষণিক ‘খুনি’ শব্দটি কার্য বিবরণী থেকে বাদ দেওয়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু বিরোধীদলীয় সাংসদেরা সবাই একসঙ্গে দাঁড়িয়ে চিত্কার-চেঁচামেচি করতে থাকেন। বিএনপির সাংসদ মওদুদ আহমদ ও জমিরউদ্দিন সরকারও দাঁড়িয়ে মাইক ছাড়াই কথা বলার চেষ্টা করেন। এ পরিস্থিতিতেই হাসানুল হক ইনু বক্তব্য চালিয়ে যান। কিন্তু হইচইয়ের কারণে কিছুই শোনা যাচ্ছিল না। বিএনপির নারী সাংসদেরা ‘...চামড়া তুলে নেব আমরা...ডিজিএফআইয়ের দালাল হুঁশিয়ার সাবধান’ স্লোগান দিতে দিতে অধিবেশন কক্ষ ত্যাগ করেন।
রাষ্ট্রপতির ভাষণ সম্পর্কে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় হাসানুল হক ইনু বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, অসত্য বক্তব্য দিয়ে তিনি চলে গেলেন। সংসদে থাকলে বিরোধীদলীয় নেতা হিসাবে তাঁর ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা হালাল হতো। ইউনূসের জন্য বিরোধীদলীয় নেতা মায়া-কান্না করছেন ষড়যন্ত্রের জাল বোনার জন্য।
সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু বলেন, সংসদের মর্যাদা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্ব সবার। যাঁরা সংসদে অশ্লীল ও অশ্রাব্য ভাষায় কথাবার্তা বলেছেন, তাঁদের কৃতকর্মের জন্য জাতির কাছে করজোড়ে ক্ষমা চাইতে হবে।
বিএনপির সাংসদ শাম্মী আক্তার বলেন, কর্নেল তাহেরকে বিচারের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সিরাজ শিকদারকে কোন আইনে হত্যা করা হয়েছে?
জামায়াতের সামশুল ইসলাম সরকারের প্রস্তাবিত নারী নীতিকে কোরআনবিরোধী বলে মন্তব্য করেন।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আরও আলোচনা করেন সৈয়দ মোহসীন আলী, এ কে এম হাফিজুর রহমান, শাহরিয়ার আলম, ইলিয়াসউদ্দিন মোল্লাহ; মেহজাবিন মোর্শেদ, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রমুখ।
0 আপনার মতামত:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।