ব্যাকুল হয়ে কাঁদছেন শশ্রুমণ্ডিত মানুষটা। ওপাশে এক তরুণের কাঁধে মাথা রেখে শোকে অচেতনপ্রায় আরেক প্রবীণ।
প্রিয়তম মানুষটাকে হারানোর ব্যথায় কাতর এমন মানুষের ছবি আর কত দেখতে হবে আমাদের? আজকাল এমন হয়েছে, শোকগ্রস্ত মানুষের ছবি দৈনিক পত্রিকার পাতায় আর তেমন বড় কোনো আলোড়ন তোলে না। অযাচিত দুর্ঘটনা, মৃত্যু-কান্না, মায়ের বুক খালি হওয়া এসব ভয়াবহ ব্যাপার কি আশ্চর্যভাবে গা-সওয়া হয়ে গেছে আমাদের! সংখ্যার বিশালত্ববিহীন মৃত্যুর খবর বুঝি আর তেমনভাবে অভিঘাত তৈরি করে না আমাদের মনে। তবু কিছু কিছু মৃত্যুর খবর অন্য রকম হয়ে ধরা দেয়। পরিবহনশ্রমিকদের হামলায় মৃত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রেদোয়ানের স্বজনদের এই আহাজারির ছবি বেদনাভারাক্রান্ত করে দেয়। (সূত্র: প্রথম আলো, ৭ মার্চ ২০১১)
মড়ার ওপর খাড়ার ঘা-এর মতো একইভাবে আমাদের দুঃখভারাক্রান্ত করে দেয় নিচের গাড়ি ভাঙচুরের ছবিটাও। সহপাঠীর মৃত্যুতে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ নিশ্চয়ই থাকবে। কিন্তু প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে কেবলই গাড়ি ভাঙচুর করাটাকে কি আমরা আমাদের সংস্কৃতির অংশ করে ফেলেছি? আর যা-ই হোক, গাড়ি ভাঙচুর আর নৈরাজ্য নিশ্চয়ই শোক সামলানোর উপায় হতে পারে না। রেদোয়ানের মৃত্যু তাই যেমন দুঃখ দেয়, এর সুষ্ঠু বিচার হোক সেটাও নিশ্চয়ই চাইব। কিন্তু রেদোয়ানের অকালমৃত্যুর পাশাপাশি পীড়িত করে এভাবে নির্বিচারে গাড়ি ভাঙচুর করে ত্রাস সৃষ্টির ঘটনাও।
0 আপনার মতামত:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।