প্রদর্শনীর নাম ‘১০০০ পিস উইমেন অ্যাক্রস দ্য গ্লোব’। ২০০৫ সালে সমষ্টিগতভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের যে এক হাজার নারী মনোনীত হয়েছিলেন, ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে তাঁদের প্রতিকৃতি নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে এই প্রদর্শনী। প্রতিটি প্রতিকৃতির সঙ্গে আছে সংক্ষিপ্ত জীবনবৃত্তান্ত। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহায়তায় যৌথভাবে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করে বাংলাদেশে সুইডিশ দূতাবাস ও আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ। বিকেলে এই প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডিশ রাষ্ট্রদূত ড. উর্স হেরেন। স্বাগত বক্তব্য দেন আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের পরিচালক সালিহা লোফে। মনোনীত এক হাজার নারীর মধ্যে বাংলাদেশের আছেন ১৬ জন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাঁদেরও কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা হলেন খুশী কবির, অ্যাঞ্জেলা গোমেজ, মহুয়া পাল, মানিকগঞ্জের আটিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্য রাফিজা বেগম, কুমিল্লার এতবারপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সুফিয়া খাতুন, মাসুদা বানু ও বেগমজাদি মাহমুদা নাসির।
প্রতিকৃতির পাশাপাশি গ্যালারির এক পাশে প্রজেক্টরে প্রদর্শিত হচ্ছে এসব নারীর কর্মকাণ্ড নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র পিস উইমেন অ্যান্ড অ্যা ড্রিম। এটি নির্মাণ করেন গ্যাব্রিয়েল হেউহাউজ ও অ্যাঞ্জেলো স্কাডেলেত্তি।
আয়োজকেরা জানান, এসব প্রতিকৃতি ও জীবনবৃত্তান্ত সংগ্রহ করেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বেসরকারি সংগঠন ‘থাউজেন্ড পিস উইমেন’। ২০০৫ সালের পর থেকে এই সংগঠনের সহায়তায় বিভিন্ন সংগঠন বিশ্বের আরও ৬০টি দেশে এ ধরনের প্রদর্শনীর আয়োজন করে। এ ধরনের প্রদর্শনীর উদ্দেশ্য সফল নারীদের সম্মান প্রদর্শন এবং অন্যান্য নারীকে অনুপ্রাণিত করা। প্রদর্শনী চলবে ১৯ মার্চ পর্যন্ত।
নারী দিবস উপলক্ষে নাটক ‘আমিনা সুন্দরী’
সবাই তাকে আমিনা সুন্দরী বলে ডাকে। ঘটনাবহুল তার জীবন। নানা ঘাত-প্রতিঘাতে থেমে যায় না সে। প্রবল প্রতিকূলতার মুখেও দীপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করে, ‘জীবন তো একটাই। সুখ-দুঃখ হাসি-কান্না সব এই এক জীবনের মধ্যে। জীবন শেষ তো বেবাক শেষ।’ নাটকের চরিত্র আমিনা যখন সংলাপটি বলছিল, তখন মহিলা সমিতি মঞ্চে পিন পতন নীরবতা। আমিনার কষ্টে মিশে যাওয়া অনেক দর্শকের চোখ ছলছল।
প্রায় ৩০০ বছরের পুরোনো লোককাহিনি নছর মালুম ও ভ্যালুয়া সুন্দরী অবলম্বনে গড়ে উঠেছে থিয়েটার আর্ট ইউনিটের নাটক আমিনা সুন্দরী। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার মহিলা সমিতি মঞ্চে নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। পুরুষশাসিত সমাজে নারীর প্রতি পুরুষের প্রবঞ্চনাকে উপজীব্য করে রচিত হয়েছে নাটকটি।
আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে আয়োজিত ‘১০০০ পিস উইমেন অ্যাক্রস দ্য গ্লোব’ প্রদর্শনী ঘুরে দেখছেন দর্শকেরা
পতিভক্ত আমিনা সুন্দরীর স্বামী নছর পেশায় জাহাজের একজন মালুম। ব্যবসার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায় ভিনদেশে। স্বামীর এই বিচ্ছেদে আমিনার জীবনে নেমে আসে বিভীষিকা। স্বামী নছর ভিনদেশি নারীকে বিয়ে করে সংসার বাঁধে। আমিনা নানা ঘাত-প্রতিঘাতের পর বন্দী হয় এক সওদাগরের ঘরে।
আমিনা সুন্দরী লিখেছেন এস এম সোলায়মান। নির্দেশনা দিয়েছেন রোকেয়া রফিক। এটি থিয়েটার আর্টের ১২তম প্রযোজনা। আমিনা সুন্দরী একটি লোককাহিনি অবলম্বনে রচিত হলেও তাতে কালোত্তীর্ণভাবে নারীর বৈষম্য-বঞ্চনাকে তুলে ধরা হয়েছে।
তারিখঃ বুধবার, ৯ মার্চ ২০১১
0 আপনার মতামত:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।