সংসদের চলতি অধিবেশনে শেয়ার পুনঃক্রয়ের আইন

মঙ্গলবার, ৮ মার্চ, ২০১১

কোম্পানি আইন সংশোধন করে শেয়ার পুনঃক্রয়ের (বাইব্যাক) বিধান চালু করার জন্য জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনেই একটি বিল উত্থাপন করবে সরকার।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গতকাল সোমবার এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পুঁজিবাজার গতিশীল করার লক্ষ্যে সরকার এ পদক্ষেপ নেবে।
বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) এক প্রতিনিধিদল মন্ত্রণালয়ে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাতের পর অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। খবর ইউএনবির।

আবুল মাল আবদুল মুহিত

আবুল মাল আবদুল মুহিত

এফবিসিসিআই সভাপতি এ কে আজাদের নেতৃত্বে ফেডারেশনের প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের প্রথম সহসভাপতি মো. জসিমউদ্দীন, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) সভাপতি সালমান এফ রহমান, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলামিন প্রমুখ। এ ছাড়া রুগ্ণ শিল্প মালিক সমিতির নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এ-সংক্রান্ত বিলের একটি খসড়া তৈরির জন্য তিনি এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। আর এফবিসিসিআইয়ের নেতারা খসড়াটি নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
আইনটি হয়ে গেলে যেকোনো প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগকারীদের কাছে থাকা শেয়ার পুনরায় কিনে নিতে বা ফিরিয়ে আনতে পারবে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক প্রয়োজনের তুলনায় মূলধনের পরিমাণ বেশি হলে বাজারে ছাড়া শেয়ারের অংশ কিনে নিয়ে মূলধন কমানো যেতে পারে। এভাবে মূলধন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তহবিলের সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং বিনিয়োগকারীদের ভালো লভ্যাংশ দেওয়ার জন্য বাইব্যাক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
এই প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ জোরদার করতে ও শেয়ারপ্রতি আয় বাড়াতে সহায়তা করে।
২০০৯ সালের প্রথম দিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) শেয়ার পুনঃক্রয়ের বিধান চালু করার জন্য তৎপরতা চালায়, কিন্তু তা সফল হয়নি। তবে গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে শেয়ারবাজারে বিরাট বিপর্যয়ের পর পুনঃক্রয়ের বিষয়টি আবারও আলোচনায় আসে।
পুনঃক্রয়ের মাধ্যমে বাজারে প্রতিষ্ঠানের শেয়ারসংখ্যা কমিয়ে দেওয়া সম্ভব। এতে আবার ওই শেয়ারের চাহিদাও বাড়তে পারে, যা একদিকে শেয়ারপ্রতি আয় বাড়ায়, অন্যদিকে সম্পদের মূল্যবৃদ্ধির ফলে বাজারে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদরও বেড়ে যায়।
সাধারণত দুভাবে পুনঃক্রয় সম্পন্ন করা যায়। একটি হলো বিদ্যমান শেয়ারধারীরা নির্দিষ্ট পরিমাণ শেয়ার উপরি মূল্যে (প্রিমিয়ামে) সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছে দরপত্র ব্যবস্থার মাধ্যমে বিক্রি করতে পারে। শেয়ার ধরে রাখার বদলে প্রতিষ্ঠানের কাছে ছেড়ে দেওয়ার লোকসান পোষাতে উপরি মূল্য দাবি করা হয়। অন্যটি হলো প্রতিষ্ঠান বাজার থেকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ শেয়ার কিনে নিতে পারে।
অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএপিএলসি সভাপতি সালমান এফ রহমান সাংবাদিকদের বলেন, শেয়ারের বাইব্যাক বিশ্বজুড়েই স্বীকৃত একটি চর্চা। বাংলাদেশেও এটি হওয়া প্রয়োজন।
বৈঠকে এফবিসিসিআই সভাপতি বস্ত্র খাতের ১৮০টি ও বস্ত্র খাতবহির্ভূত ২৮০টি রুগ্ণ শিল্পকারখানাকে সুদ মওকুফের জন্য অর্থমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, সরকারি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হলে একদিকে ঋণের আসল টাকা সরকার তথা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো ফেরত পাবে, অন্যদিকে উদ্যোক্তারা এসব প্রতিষ্ঠান আবার চালু করার উদ্যোগ নিতে পারবেন। এতে বিপুলসংখ্যক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, রুগ্ণ শিল্পবিষয়ক টাস্কফোর্স যেসব প্রতিষ্ঠানের জন্য সুপারিশ করেছে, তারাই শুধু সরকারপ্রদত্ত সুবিধা পাবে। টাস্কফোর্সের দেওয়া তালিকার বাইরে কোনো প্রতিষ্ঠান ওই সুবিধা পাবে না।
অর্থমন্ত্রী আরও জানান, তিনি চান না দেশে কোনো রুগ্ণ শিল্পপ্রতিষ্ঠান থাকুক।
রুগ্ণ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ঋণের সুদ মওকুফ ও তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের জন্য এর আগে এফবিসিসিআই ১৪৭টি ও শিল্প মন্ত্রণালয় ১০৮টি প্রতিষ্ঠানের নাম জমা দিয়েছে


সুত্রঃ প্রথম আলো
তারিখঃ মঙ্গলবার, ৮ মার্চ ২০১১

0 আপনার মতামত:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।

Avro Keyboard - Unicode Compliant FREE Bangla Typing Softwareবাংলা লিখার সপ্টওয়্যার আভ্র ডাউনলোড করতে খানে ক্লিক করুন
 
 
 

বিশাল বাংলা

কম্পিউটার প্রতিদিন

রাজনীতি...

বিনোদন

খেলার খবর

অর্থ ও বাণিজ্য