হঠাৎ করে ঢাকা মহানগরীতে সিরিজ খুনের ঘটনায় সরকারের উপর মহল উদ্বিগ্ন। সবার প্রশ্ন_ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আকস্মিক অবনতির কারণ কী? আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই বা কী করছে? সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর সংস্থাপন ও জনপ্রশাসনবিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের সভাপতিত্বে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তার কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সরকারের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা একদিকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেন, অন্যদিকে কারণও জানতে চেয়েছেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আবদুল করিম, স্বরাষ্ট্রসচিব আবদুস সোবহান শিকদার, পুলিশের আইজি হাসান মাসুদ খন্দকার ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম সম্প্রতি রাজধানীতে একের পর এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনশৃক্সখলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এসব ঘটনার কারণ কী তা তিনি সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে চান। তিনি আইনশৃক্সখলা বাহিনীকে সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন।
জবাবে স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করা হচ্ছে। খুনি ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে আইনশৃক্সখলা বাহিনীকে সব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেন, অপরাধীদের শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। আইনশৃক্সখলা বাহিনীকে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক খুনিরা খুনের কৌশল পাল্টে প্রকাশ্যে হত্যার পরিবর্তে টার্গেট ব্যক্তিকে গুম কিংবা গুপ্তহত্যার ঘটনা ঘটাচ্ছে। পুলিশ এসব হত্যাকাণ্ডের মোটিভ উদঘাটনসহ হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা এবং অপরাধের নেপথ্য কারণ খুঁজে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে।
এদিকে বৈঠকের বিস্তারিত তিনি সঙ্গে সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটলেও কূলকিনারা করতে পারছে না আইনশৃক্সখলা বাহিনী। গত দুই মাসে রাজধানীর কয়েকটি হত্যাকাণ্ড সরকারকে ভাবিয়ে তুলেছে।
১৬ ফেব্রুয়ারি দশম শ্রেণীর ছাত্রী টুম্পার গলিত লাশ সিদ্ধিরগঞ্জ ডিএনডি বাঁধ এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। একই ভাবে খুনি চক্র গত বছরের মাঝামাঝি তার ভাই বাবলাকেও হত্যা করে। ১০ জানুয়ারি রাজধানীর ইন্দিরা রোডে মা ভার্জিয়ানা রোজারিও এবং ছেলে মিল্টন রোজারিওকে জবাই করা হয়। ২৮ জানুয়ারি রাজধানীর শান্তিনগরে সাংবাদিক ফরহাদ খাঁ ও তার স্ত্রী রহিমা খাতুনকে জবাই করা হয়। ৭ মার্চ রাজধানীর কদমতলী এলাকা থেকে দুই সহোদরসহ তিনজনের জবাই করা লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে সর্বশেষ মার্চের প্রথম সপ্তাহে রাজধানীর পল্লবীতে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করা হয় কলেজছাত্রী লিপি আক্তারকে। এ ছাড়াও গতানুগতিক অপরাধের ধারা পাল্টে নতুন নতুন কৌশলে খুন, রাহাজানি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে।
0 আপনার মতামত:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।