ক্রিকেটের মাঠে তারকারা

বুধবার, ৯ মার্চ, ২০১১

বিশ্বকাপ ক্রিকেটে নিজের দেশের খেলা দেখতে বাংলাদেশের বিনোদনভুবনের মানুষেরা মাঠে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের খেলা দেখতে মাঠে গিয়েছিলেন আফজাল হোসেন, মমতাজ, নওশীন, তানিশা ও ফারজানা ব্রাউনিয়া। খেলার পুরো সময় তাঁরা দেশের পতাকা নিয়ে প্রিয় দলকে উৎসাহ জুগিয়েছেন। খেলার সময় তাঁরা ছিলেন বেশ উৎফুল্ল। আগামীকাল বাংলাদেশ খেলবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে। তাঁরা জানিয়েছেন, আগামীকালের খেলা দেখতে আবারও যাবেন মাঠে।

বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ডের খেলা দেখতে গ্যালারিতে তাজিন হালিম, তানিশা, ব্রাউনিয়া, নওশিন ও মৃত্তিকা
বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ডের খেলা দেখতে গ্যালারিতে তাজিন হালিম, তানিশা, ব্রাউনিয়া, নওশিন ও মৃত্তিকা

মমতাজ বললেন, ‘যখন মাঠে ঢুকলাম, তখন দেখলাম চারদিকে বাংলাদেশ দলের সমর্থকেরা চিৎকার করে উল্লাস প্রকাশ করছে। এ যেন এক অভাবনীয় দৃশ্য। তামিম ইকবালের একের পর এক মারে মানুষের আনন্দের কোনো সীমা নেই। আমার মেয়ে বাংলাদেশের পতাকা অঙ্কন করে দিয়েছিল মুখে। ফলে আমার নিজের মধ্যেও আনন্দের কোনো সীমা ছিল না। আমার উপস্থিতি দেখে চারপাশের ক্রীড়ামোদী দর্শকেরাও বেশ আনন্দিত।
যখন প্রথম উইকেট গেল, তখন একটু খারাপ লাগল। আবার যখন ব্যাটে রান এল, তখন আমিও দর্শকদের মতোই হাততালি দিতে লাগলাম। কিন্তু একটা সময় দ্রুত উইকেটগুলো পড়ে যাওয়ার কারণে মনটা খারাপই লাগল। তবুও যেন আশা ছাড়িনি। বোলিংটা এত ভালো করলাম যে শেষ হাসি আমরাই হাসলাম। সেদিনের সেই আনন্দের স্মৃতি এখনো চোখের সামনে ভেসে ওঠে। আগামীকাল আমাদের আরও একটি খেলা রয়েছে। এই খেলাও দেখতে যাব। আমরা আরও একবার জয় নিয়ে আসব, এই প্রত্যাশাই করছি।’
শারমিন লাকী এমনিতেই ক্রিকেট খেলার ভক্ত। তারপর আবার নিজ দেশের খেলা। এ জন্য তিনি অনেক কাঠখড় পুরিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে বাংলাদেশ দলের প্রতিটি খেলার টিকিট সংগ্রহ করেছেন। আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে দেশের খেলা দেখার জন্য খেলা শুরুর বেশ কিছু সময় আগেই শারমিন লাকী দর্শক গ্যালারিতে জায়গা করে নিলেন। তারপর প্রথম থেকেই বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। ‘কিন্তু যখন রান করল খুবই কম, তখন মন খারাপ। তার পরও আশা ছাড়িনি। আয়ারল্যান্ডের খেলোয়াড়দের যখন আমরা আউট করতে পারছিলাম না, তখন একপর্যায়ে প্রায় কেঁদেই ফেলেছিলাম। টানটান উত্তেজনার মধ্যে ছিলাম। একটা সময় বিজয়ের আনন্দ নিয়েই মাঠ ছাড়লাম। কী যে শান্তি, উফ্! আগামীকালও মাঠে যাচ্ছি। আমাদের খেলোয়াড় ভাইয়েরা আবারও আমাদের মুখে হাসি ফোটাবে এই বিশ্বাস আছে আমার।’ বলছিলেন শারমিন লাকী।
চ্যানেল আইয়ের ব্র্যান্ডিং করার উদ্দেশ্যেই মূলত ব্রাউনিয়া, নওশীন ও তানিশা মাঠে গিয়েছিলেন। সেখানে ওয়ান টাইম খাওয়ার সাদা প্লাস্টিকের থালায় করে খাওয়া সারলেন। তারপর কী এক বুদ্ধি এল তাঁদের মাথায়। ছোট্ট ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে লিপস্টিক ও কাজল বের করে তিনটি প্লাস্টিকের থালার উল্টো দিকে O U T লিখে থালা তিনটি তিনজনে রেখে দিলেন। বাংলাদেশ দল ব্যাট করল। আশানুরূপ রান না এলেও তাঁরা বাংলাদেশের বোলিংয়ের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। বাংলাদেশ বোলিং শুরু করল। তারপর তিনজনে আউট লেখা থালা তিনটি উঁচু করে ধরলেন।
‘আমরা খুবই মজা করেছি। বাংলাদেশ দল যখন ব্যাটিং করছিল, তখন আমিরুল ইসলাম ভাই আমাদের বললেন, যদি বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড় এখন একটি ৪ মারতে পারে, তবে এক হাজার টাকা নগদ দেবেন। আমরা বাজি ধরে ফেললাম। একটু পরেই একটি ৪ মারল আমাদের দেশের খেলোয়াড়। সঙ্গে সঙ্গে এক হাজার টাকা পেলাম। ওদিকে আরেফিন চাচা তো বলেই দিলেন, দেশ জিতলে ওয়েস্টিনে একটা খাওয়া হবে। আমরা জিতেছি। এখন খাওয়াটা হবে সামনে।’ বলছিলেন তানিশা।
নওশীন একটু দেরিতেই মাঠে এলেন। যদিও মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম থেকে তাঁর বাসার দূরত্ব মাত্র কয়েক গজ। খেলা শুরুর পরেই নওশীন গ্যালারিতে এলেন। আসার পরপরই বাংলাদেশ দলের একটি উইকেটের পতন হলো। তখনই তানিশা ও ব্রাউনিয়া বললেন, ‘এই যে নওশীন কুফা হয়ে এসেছে।’ নওশীনের কিছুটা মন খারাপ হলেও সেই খারাপের আবহটা কেটে গেছে দল জেতার পর। নওশীন বললেন, ‘পুরো সময়ই ভীষণ চিন্তার মধ্যে ছিলাম। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের প্রথম দুটি উইকেট পড়ে যাওয়ার পর আমার কাছে মনে হচ্ছিল, আমরা জিতবই এবং জিতেছিও। আগামীকালও যাচ্ছি আমি খেলা দেখতে।’
রান কম করেছে কী বেশি করেছে, এ নিয়ে কোনো মাথাব্যথা ছিল না ফারজানা ব্রাউনিয়ার। দেশ জিতবে—এই প্রত্যয় নিয়েই মাঠে গিয়েছিলেন তিনি। খেলার পুরো সময় নিজে ছিলেন বেশ হাসি-খুশি। তিনি যেখানে বসেছিলেন, সারাক্ষণ সবাইকে মাতিয়ে রেখেছিলেন। খাবারের থালার উল্টো পিঠে আউট লিখে আয়ারল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের সময় বারবার উঁচিয়ে ধরছিলেন তিনি, তানিশা ও নওশীন। ফারজানা বললেন, ‘পুরো খেলা আমরা খুবই উপভোগ করেছি। যে খুশি মন নিয়ে মাঠ ছেড়েছি, আগামীকালের খেলা দেখে আবার একইভাবে মাঠ ছাড়তে চাই।’


সুত্রঃ প্রথম আলো
তারিখঃ ০৩-মার্চ-২০১১

0 আপনার মতামত:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।

Avro Keyboard - Unicode Compliant FREE Bangla Typing Softwareবাংলা লিখার সপ্টওয়্যার আভ্র ডাউনলোড করতে খানে ক্লিক করুন
 
 
 

বিশাল বাংলা

কম্পিউটার প্রতিদিন

রাজনীতি...

বিনোদন

খেলার খবর

অর্থ ও বাণিজ্য