রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সদস্যদের দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। এ কারণে বিদ্যালয়টিতে পাঠদানে ব্যাঘাত ঘটছে এবং শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। পরিচালনা কমিটির সদস্যরা এলাকায় মাইকিং করে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ মার্চ পর্যন্ত বিদ্যালয়টি বিধিবহির্ভূতভাবে পাঁচ দিন বন্ধ রাখেন। পরে খোলা হলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
জানা গেছে, শিক্ষাক্ষেত্রে বিদ্যালয়টিতে অচলাবস্থা বিরাজ করলেও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বা অন্য কোনো কর্মকর্তা এখন পর্যন্ত পরিদর্শন করেননি।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোফাখাইরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘প্রধান শিক্ষিকা বদমেজাজি। মাসে দু-তিন দিন স্কুলে আসেন। শিশুদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। বিদ্যালয়ের উন্নয়নের নামে দেওয়া প্রকল্পের ২০ হাজার টাকা তুলে গত বছর আত্মসাৎ করেছেন। শিক্ষক হাজিরা খাতায় তাঁকে অনুপস্থিত দেখালে তিনি হয় সেই পাতা ছিঁড়ে ফেলেন বা লাল কালির ওপর উপস্থিতি স্বাক্ষর করেন।’
অন্যদিকে প্রধান শিক্ষক শাহিনা বেগম তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন উল্লেখ করে বলেন, ‘পরিচালনা কমিটির সদস্যরা প্রতি মাসে একটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করেন। এতে বাচ্চাদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে। বাধা দেওয়ায় অনেকে মিথ্যা অভিযোগ করে আমাকে সরাতে চাইছেন। বিধিবহির্ভূতভাবে এলাকায় মাইকিং করে বিদ্যালয়টি পাঁচ দিন বন্ধ রাখেন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা। স্লিপ প্রকল্পের ২০ হাজার টাকা আমার কাছে জমা আছে।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোফাখাইরুল ইসলাম বলেন, ‘আরডিআরএস নামের বেসরকারি সংস্থাটি বছর শেষে শিশুদের নিয়ে বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এতে পড়াশোনায় ব্যাঘাত হয় না।’
আরডিআরএসের (শিক্ষা) উপজেলা মাঠ ব্যবস্থাপক শামসুল হক বলেন, ‘শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে উপজেলার মাত্র ২৪টি সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়ে আমরা কাজ করছি। স্কুলসময়ে স্কুলে কোনো সভা করি না।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যালয়টিতে ১২৬ জন শিক্ষার্থী আছে। বর্তমানে বিদ্যালয়ে প্রতিদিন ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী আসছে।
অভিভাবক আকরাম হোসেন ও আলতাফ হোসেন অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক রংপুর শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মাঝেমধ্যে স্কুলে আসেন। এ সুযোগ নেন অন্য শিক্ষকেরাও।
উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুস সোবহান প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্কুলে অনুপস্থিতি, অসদাচরণ, স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের কারণে ওই প্রধান শিক্ষকের বেতন গত ডিসেম্বর থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে বিদ্যালয়টি বন্ধ রাখা বিধিবহির্ভূত।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগ তদন্তের জন্য উপজেলার দুজন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছি। তাঁরা দু-এক দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেবেন। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিষয় সমুহ...
বিভাগীও শহর তথ্য কনিকা
আরো কিছু গুরুত্তপূর্ণ বিষয়...
শিক্ষক ও কমিটির দ্বন্দ্ব বিদ্যালয় অচলের দশা
বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ, ২০১১অন্তরভুক্ত বিষয় বিশাল বাংলা
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 আপনার মতামত:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।