ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) পরিবহন বিভাগে বছরে প্রায় ১৮ কোটি টাকার জ্বালানি তেল চুরির প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে। ডিসিসির অভ্যন্তরীণ এক তদন্তে এ চাঞ্চল্যকর খবর বেরিয়ে এসেছে। তবে এর পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে। জ্বালানি খাতে ডিসিসির বার্ষিক বাজেট ৫৫ কোটি টাকা।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে পরিবহন বিভাগ তেল খরচ দেখায় তিন কোটি ৩০ লাখ টাকা, যা অন্য মাসের তুলনায় ৫০ লাখ টাকারও বেশি। অথচ ওই মাসে ডিসিসির বিশেষ কোনো কর্মসূচি ছিল না। এ ঘটনা ভাবিয়ে তোলে ডিসিসি প্রশাসনকে। রহস্য উদঘাটনের জন্য প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
কমিটির প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনের তথ্যমতে, আবর্জনা পরিষ্কারের জন্য প্রতিদিনের পর] নির্ধারিত ট্রিপ ৪৫০টি। প্রতি ট্রিপের জন্য জ্বালানি বরাদ্দ ১০-২০ লিটার, গড়ে ১৫ লিটার। এর মধ্যে ২০০ ট্রিপও বর্জ্য অপসারণ হয় না। কিন্তু খরচ দেখানো হয়। বাকি ২৫০টির প্রতি ট্রিপে প্রায় পাঁচ লিটার তেলের অপব্যবহার হয়। ২০০ গাড়িতে তেলের অপব্যবহার হচ্ছে তিন হাজার লিটার এবং ২৫০ ট্রিপ থেকে এক হাজার ২৫০ লিটার। এর বর্তমান বাজারমূল্য (৪৪ টাকা লিটার) এক লাখ ৮৭ হাজার টাকা। কর্মকর্তারা ব্যবহার করেন ৮০টি গাড়ি। দৈনিক এসব গাড়ি থেকে তেলের অপব্যবহার হয় দুই লিটার। প্রতিদিন ১৬০ লিটার তেলের অপব্যবহার হচ্ছে, যার বাজারমূল্য সাত হাজার ৪০ টাকা। বিদ্যুৎ ও পানিবাহী গাড়ি এবং অ্যাম্বুলেন্স ৬০টি। এখানেও প্রতিদিন দুই লিটার করে তেলের অপব্যবহার হচ্ছে, যার বাজারমূল্য পাঁচ হাজার ২৮০ টাকা। যান্ত্রিক-২ বুলডোজার, এক্সকাভেটর, ডামট্রাক, রোডরোলার, পেভার মেশিন, পানির গাড়ি, টায়ার ডোজারে প্রতিদিন ৭০০ লিটার তেলের অপব্যবহার হয়, যার বর্তমান মূল্য ৩০ হাজার ৮০০ টাকা। কনটেইরা, কমপেক্টর, আমরুল গাড়ির ৫০০ ট্রিপের মধ্যে হয় ৩৭৫টি। বাকি ১২৫টি ট্রিপ হয় না। এ বাবদ প্রতিদিন এক হাজার ৮৭৫ লিটার জ্বালানির অপব্যবহার হয়, যার বাজারমূল্য ৮২ হাজার ৫০০ টাকা। দৈনিক প্রায় চার লাখ টাকার তেলের অপব্যবহার হচ্ছে, যার মাসিক হিসাব দাঁড়ায় এক কোটি ২০ লাখ টাকা।
0 আপনার মতামত:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।