যারা এই দেশের জন্য প্রাণ দিল আমাদের একটি সুন্দর দেশ দিল তাদের আমরা কী দিলাম?
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার বাগপাচড়া গ্রামে ১৯৩৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন। তাঁর দুই ছেলে তিন মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে মো. বাহার প্রায় ১৪ বছর আগে মারা যান। তিন মেয়ে বিয়ের পর থেকে স্বামীর বাড়িতে বসবাস করছেন। ছোট ছেলে শওকত। স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন যখন শহীদ হন, তখন শওকতের বয়স দুই বছর। বর্তমানে ৪০ বছর বয়সী শওকত তাঁর বাবার ভিটেতেই আছেন। স্ত্রী রাবেয়া আক্তার (৩০) ও মেয়ে বৃষ্টিকে (৭) নিয়ে শওকতের সংসার। শওকত জানান, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম কাজ করে কোনো রকমে সংসার চালান। তিনি বলেন, ‘বাবা বীরদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন—সেই গর্বে সব দুঃখ, কষ্ট ভুলে থাকি।’ অর্থকষ্টের কারণে মংলা বন্দরে গিয়ে বাবার সমাধিটিও দেখার সৌভাগ্য হয়নি বলেই কেঁদে ফেলেন শওকত।
শওকতের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার বলেন, ‘এ ঈদেও নিজেরা কোরবান দিতে পারিনি। পাড়ার লোকজন যখন দুই-তিন টুকরা গোসত হাতে করে দিয়ে যান তখন কষ্টে বুক ফেটে যায়।’ তিনি অভিযোগ করেন, সরকারি সাহায্যও সেভাবে তাঁদের কাছে পৌঁছে না।
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন জাদুঘর ও গ্রন্থাগারের সভাপতি আতাউর রহমান (৭৬) প্রথম আলোকে বলেন, এলাকাবাসীর সহায়তায় শওকত কোনো রকমে বেঁচে আছে। সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী আবদুর রহমান বলেন, শওকতকে সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
কোথায় আমাদের দেশের প্রতি ভালবাসা – যারা আর স্বাধীনতার ঘোষক এ নিয়েই চুলা চুলি করতেই পাঁচ বছর সময় পার করে দেয়; তাদের কি এতটুকু সময় হবে, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ছেলের জন্য কিছু স্থায়ী ভাবে করতে? নাকি, একদল করে গেলে অন্যদল ক্ষমতায় এসে তা আবার বন্ধ করে দেবে?
0 আপনার মতামত:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।