সিংহের ঘরে বসবাস

বুধবার, ৯ মার্চ, ২০১১

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার প্রাণী সংরক্ষণাগারে সিংহের খাঁচায় শুয়ে আছেন জিম জ্যাবলন। গত ১ থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ওই খাঁচায় দুটি হিংস্র সিংহের সঙ্গে বাস করেছেন ৪২ বছর বয়সী সেনাবাহিনীর পশুচিকিৎসক জিম। লোহার শিক দিয়ে চারদিক ঘেরা ওই খাঁচা। ভাবছেন, দু-দুটি হিংস্র সিংহের ঘরে তিনি বাস করছেন কীভাবে?
জিম জ্যাবলন তাঁর পোষা প্রাণীগুলো সংরক্ষণের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সিংহের ঘরে বসবাস করছেন। সবাইকে তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতোই ঘটনা! ১৮ মাস বয়সী আফ্রিকান সিংহ লি এবং ১০ মাস বয়সী এডের সংরক্ষক জিমকে তাদের খাঁচায় পেয়ে বেশ আনন্দিত। তারাও জিমের সঙ্গে খুনসুটিতে মেতে ওঠে মাঝেমধ্যে।

সিংহের ঘরে জিম জ্যাবলন
সিংহের ঘরে জিম জ্যাবলন

ওয়াইল্ড লাইফ রিহ্যাবিলিটেশন অব হারনান্দো কান্ট্রি নামের এই বন্য প্রাণী সংরক্ষণাগারটি জিম গড়ে তোলেন ১৯৯৯ সালে। অসুস্থ, আঘাতপ্রাপ্ত ও এতিম পশু উদ্ধার করে এনে তিনি এই সংরক্ষণাগারে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। প্রাণীগুলো সুস্থ হলে সেগুলো আবার বনে ফিরিয়ে দিয়ে আসেন। শুরুতে কয়েকটি ভালুক, নেকড়ে, বনবিড়াল ও কুমির নিয়ে তাঁর এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হলেও এখন ওই সংরক্ষণাগারে বানর, বাঘসহ অনেক পশুই আছে।
শুরুর দিকে দু-একটি পশুকে দেখভাল করার জন্য জিমকে তেমন একটা বেগ পেতে হয়নি। কিন্তু যেভাবে তাঁর সংরক্ষণাগারে পশুর সংখ্যা বেড়ে চলেছে, তাতে ওই পশুগুলোর খাওয়াদাওয়া ও চিকিৎসার ব্যয় সামলাতে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁকে। কিন্তু হাল ছাড়েননি জিম। প্রতিজ্ঞা করে বসেছেন, যেভাবেই হোক বনের এই পশুকে বাঁচিয়ে তুলতে হবে তাঁকে। পশুগুলোর জন্য কী করা যায়—এই নিয়ে ভাবনার যেন তাঁর শেষ নেই। তাই অনেক ভেবেচিন্তে একদিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সংরক্ষণাগারের হিংস্র পশু সিংহের ঘরেই তিনি বসবাস করবেন। যেই ভাবা সেই কাজ।
‘টাকা-পয়সা ছাড়া কোনোভাবেই এই প্রাণীগুলোকে বাঁচানো যাবে না। ‘আমি আশা করছি, মানুষ আমাকে সিংহের ঘরে থাকা দেখলে বুঝবে, আমি কেন তাদের ঘরে থাকছি। এটা দেখে হয়তো অনেকেই প্রাণীগুলোর জন্য আমাকে সাহায্য করবে।’ বলেছেন জিম জ্যাবলন।
তবে বনের হিংস্র পশু সিংহ বলে কথা। যেকোনো সময় তারা যে চরম হিংস্র হয়ে উঠতে পারে, জিম তা খুব ভালো করেই জানেন। আর তাই খাঁচার ভেতরেই ১২ ফুট উঁচুতে খড় দিয়ে নিজের জন্য একটি বিছানা বানিয়েছেন তিনি। তা ছাড়া সিংহ সাধারণত এক দিনে ১৮-২০ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘুমায়। তাই ওই সময়টায় নিশ্চিন্তে সিংহের পাশেই শুয়ে পড়তে পারেন জিম।
সিংহ দুটিকে বন্ধুসুলভ আচরণের জন্য কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ দেননি জিম। তবে লি ও এড আরেকটু বড় হয়ে উঠলে জিম আর তাদের সঙ্গে থাকবেন না।
‘আমি জানি, তারা এখনো অনেক ছোট এবং এটা তাদের বেড়ে ওঠার বয়স। সিংহ দুটি বড় হলে হয়তো তাদের আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না। তা ছাড়া তাদের আমি প্রকৃতিতেই ছেড়ে দিতে চাই। তাই খুব বেশি দিন তাদের সঙ্গে বসবাস করার চ্যালেঞ্জ আর নিতে চাই না।’ বলেছেন লি ও এডের সংরক্ষক জিম জ্যাবলন।
ওয়েবসাইট অবলম্বনে আবু হেনা।


সুত্রঃ প্রথম আলো
তারিখঃ বুধবার, ৯ মার্চ ২০১১,

0 আপনার মতামত:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।

Avro Keyboard - Unicode Compliant FREE Bangla Typing Softwareবাংলা লিখার সপ্টওয়্যার আভ্র ডাউনলোড করতে খানে ক্লিক করুন
 
 
 

বিশাল বাংলা

কম্পিউটার প্রতিদিন

রাজনীতি...

বিনোদন

খেলার খবর

অর্থ ও বাণিজ্য