অসংখ্য ডক্টরেট ডিগ্রী ও জ্ঞানের মহা জঞ্জালের চাপে মাঝে মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ দিয়ে মহামূল্যবান বাণী বেরিয়ে আসে। যেমন আজ তিনি জাতিকে জানালেন, “বেগম খালেদা জিয়া মেট্রিকে ফেল করেছিলেন। তাই তিনি পাশ করেন নাই, কাজেই আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা পাশ করবে কেন? বলি আমি পারি নাই, তোরা পারবি কেন?” তবে নিন্দুকেরা বলেন, শিক্ষাই আলো। যার মাঝে যতটুকু শিক্ষা আছে সমাজ তার দ্বারা ততটুকু আলোকিত হয়। মানুষের কথাবার্তা, আচার আচরণেই শিক্ষাদীক্ষার কিরণ বিচ্ছুরিত হয়। আর গ্রামগঞ্জের স্বল্পশিক্ষিত বাসের ড্রাইভার হেল্পার কিংবা হোটেল রেস্তোরার কর্মচারীরাও জানে, ব্যবহারেই বংশের পরিচয় কিংবা বলা যায় শিক্ষা-দীক্ষার পরিচয়।” তবে মহাজ্ঞানী শেখ হাসিনার পক্ষে এত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় স্মরণে রাখা আদৌ সম্ভব কি না তাই ভাবনার বিষয়।
যারা বেশি জ্ঞানী তাদের কিছু ছোটখাট সমস্যা আছে। বিশেষকরে বিজ্ঞানীদের ভুলো মন নিয়ে অনেক গল্প আছে। আইনস্টাইন তো এমন ভুলো মনের ছিলেন যে নিজের বাসার ঠিকানাই ভুলে যেতেন। তবে বিজ্ঞানীদের বৌদের ভুলোমন নিয়ে তেমন কিছু শোনা যায় না। সম্ভবত তাদের এক্ষেত্রে আরো এক ডিগ্রী উপরে থাকার কথা, ঠিক নাপিতের বৌদের মতো। বিজ্ঞানী ওয়াজেদের জেদী বৌয়েরও এ ধরণের ছোটখাট কিছু সমস্যা আছে, যা তিনি বুঝতে পারেন না। তিনি বুঝতে পারেন না, তিনি যখন কথা বলেন, মুর্খদেরও হার মানিয়ে দেন, তিনি যখন শব্দ উচ্চারণ করেন, ভুল উচ্চারণ করেন (যেমন সম্মানকে তিনি সন্মান উচ্চারণ করেন), তিনি একটা বলতে গিয়ে অন্যটা বলে ফেলেন (বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০১১ উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০০১ উদ্বোধন করে ফেলেন)। সবচেয়ে বড় সমস্যা, তিনি বক্তৃতা দেয়ার সময় একটা বাক্য শুরু করলে শেষ করতে পারেন না, শুরুটা হয় এক বিষয় দিয়ে, লাইনটি শেষ হয় অন্য বিষয়ে। যদিও তার মতো জ্ঞানী পন্ডিতের এসব তুচ্ছ বিষয় খেয়াল করার কথা নয়, তিনি খালেদা জিয়ার জীবনবৃত্তান্ত রচনায় ইদানিং মহাব্যস্ত। আশাকরা যায় বৈচিত্রময় জীবনের অধিকারী খালেদা জিয়ার জীবনের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষন করে শেখ হাসিনা আরো একটি ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করতে পারবেন।
তবে একটা চিন্তা আমাকে মাঝে মাঝে ব্যাকুল করে। শেখ হাসিনা তার জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন লন্ডনে। তবু ইংরেজী ভাষার প্রতি তার রয়েছে সীমাহীন ভীতি। তিনি ইংরেজী যেমন বলতে পারেন না, দেখে দেখে পাঠ করতেও গলদঘর্ম হয়ে যান। আমার স্পষ্ট মনে আছে, শেখ হাসিনা বিগত আমলে বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন। প্রশ্নগুলো পূর্বেই তাকে সরবরাহ করা হয়েছিল এবং তিনি মুখস্ত জবাবগুলো মোটামুটি চালিয়ে গেলেন। কিন্তু গন্ডগোল বাধে তখন, যখন শুরু হয় উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব। শেখ হাসিনাকে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন নাজেহাল করে তার মাঝে ভারতের জনৈক দর্শক উপমহাদেশে অভিন্ন মুদ্রার প্রচলন নিয়ে প্রশ্ন করেন। জবাবে শেখ হাসিনা বাংলায় বললেন, আমি আমার দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বাংলায় কিছু বলতে চাই। তার এমন ইংরেজী ভীতিতে তিনি আদৌ লজ্জিত হয়েছিলেন কি না জানি না তবে যেসকল বাংলাদেশী টিভির পর্দায় শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকারটি দেখেছিলেন তাদের লজ্জার কোন সীমা-পরিসীমা ছিল না। আসলে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এমনকি জাতিসংঘেও শেখ হাসিনা বাংলায় যত বক্তৃতা করেন তা আদৌ বাংলার প্রতি ভালোবাসার জন্য নয়, শ্রেফ ইংরেজী ভীতি থেকেই তিনি ইংরেজী এরিয়ে চলেন। ইংরেজী ভীতিকে আড়াল করতেই তিনি বাংলার প্রতি ভালোবাসা ভান করেন মাত্র।
3 আপনার মতামত:
কেউ কারে নাহি ছাঢ়ে সমানে সমান।
শিক্ষায় বেগম খালেদার দুর্বলতা না থাকলে উনিও কম যেতেন কোথায়। উনিতো ম্যাট্রিক না পাস করেই কলেজে পড়ার ফিরিস্তি দিয়েছিলেন। এ গোমর ফাঁস না হলে উনি এতদিনে কত ডিগ্রী বগলদাবা করতেন।
খালেদা জিয়া পড়ালেখা যানে না বুঝলাম, কিন্তু শেখ হাসিনা আপনিতো জানেন, তাহলে আপনার ইংরেজির এত দূরবস্থা কেন?? এতগুলি মহামূল্যবান ডিগ্রী আপনার দখলে কিন্তু তারপরেও তো মনে হয় ইংরেজি বলতে গেলে আপনার দাত সবগুলি খুলে এখনই পড়ে যাবে। তার প্রমানতো World Cup এর অনুষ্ঠানেই দেখা গেছে।
১। শেখ হাসিনার ইংরেজী বলা আগেও শুনেছি, যখন তিনি নিজের মত করে বলতেন। ইংরেজীতে তিনি এক দীর্ঘ সাক্ষ্যাৎকারও দিয়েছেন (বিবিসির স্বপ্নাদাশ গুপ্তার সাথে)। সেখানে বা অন্য কোথাও কোন ভূল ইংরেজী বলেছেন বলে কেউ বলতে পারছেনা।
২। কিন্তু বিপত্তি ঘটছে ইংরেজী বলার স্টাইল পরিবর্তন করায়। বুঝা যাচ্ছেনা তিনি কোন জগতের ইংরেজী বলছেন। সমস্যাটা আসলে অন্য জায়গায়। একেই তো উনার বয়স। তার উপর এবয়সে আকৃষ্ট হয়েছেন ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের চমৎকার ইংরেজী বাচনভঙ্গিতে। অনুসরণ করার চেষ্টা করছেন নিজের ছেলের বাচন ভঙ্গিকে।
৩। এবয়সে বেহুদা কসরত না করলেই কি নয়? ক্ষতি নাই বরং জাতির ইজ্জত বাড়বে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।