দেশ নিরক্ষরমুক্ত হবে কবে?

বুধবার, ৯ মার্চ, ২০১১

দেশ নিরক্ষরমুক্ত হবে কবে? এই প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট জবাব খুঁজে পাওয়া মুশকিল তবে একের পর এক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের দৃষ্টান্ত রয়েছে মূলত ১৯৯০ সালের পর থেকেই নিরক্ষরমুক্তির বিষয়টি রাজনৈতিক অঙ্গীকারে পরিণত হয় বাস্তবে গত দেড় যুগে দেশ নিরক্ষরমুক্ত হয়নি, তবে সরকার ও দাতা সংস্থার অঢেল টাকা খরচ হয়েছে ওই খাতে নিরক্ষরতা ইস্যু নিয়ে দুর্নীতি ও লুটপাটের প্রচুর অভিযোগ রয়েছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারও তাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ২০১৪ সাল
এর আগে ২০০০ সালের মধ্যে দেশ নিরক্ষরমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছিল আওয়ামী লীগের সরকার এরপর বিএনপির সরকার প্রথমে ২০০৩ সালের মধ্যে এবং পরে ২০০৬ সালের মধ্যে দেশ থেকে নিরক্ষরতা দূর করার অঙ্গীকার করেছিল
সরকারি ও বেসরকারি তথ্য পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক মানুষ এখন ‘শিক্ষিত’ তাঁরা লিখতে, পড়তে ও গুনতে পারেন ‘শিক্ষিত’ হিসেবে গণ্য করার আন্তর্জাতিক সংজ্ঞা অনুযায়ী শিক্ষার এই হার নির্ধারণ করা হয়েছে
নব্বই-পরবর্তী সময়ে শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্যসহ কয়েকটি প্রকল্প বা কর্মসূচি বাস্তবায়নের আগে সরকারি হিসাবে শিক্ষার হার ছিল ৩৮ থেকে ৪০ ভাগ এখন ওই হার ৬২ ভাগ অর্থাত্ সাক্ষরতার হার সরকারি হিসাবে বেড়েছে প্রায় ২২ শতাংশ কিন্তু বেসরকারি হিসাবে দেশে শিক্ষার বর্তমান হার ৪১ থেকে ৪২ শতাংশ ২০০৫ সালে গণসাক্ষরতা অভিযান বলেছে, এই হার ৪১ দশমিক ৭ ইউনেসকো, ঢাকা এবং ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের উদ্যোগে ২০০৫ সালে জাতীয় নমুনা জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, বছরে সাক্ষরতার হার বেড়েছে শতকরা মাত্র ১ দশমিক ২ শতাংশ তবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত ‘লিটারেসি অ্যাসেসমেন্ট সার্ভে ২০০৮’ শীর্ষক জরিপে দেখা গেছে, ১১ বছর বয়স্কদের শিক্ষার গড় হার এখন ৪৯ দশমিক ৭ শতাংশ ১৫ বছরের অধিক বয়স্কদের বেলায় ওই হার ৪৮ দশমিক ৮ শতাংশ
তবে নিরক্ষরতা নিয়েদুর্নীতিও হচ্ছে দুর্নীতির মহোত্সব ঠেকাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৪ উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা অধিদপ্তর বিলুপ্ত ঘোষণা করেন সরকারি মূল্যায়নে দেখা যায়, ৬৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে পরিচালিত গণশিক্ষা কার্যক্রমের ব্যাপক সাফল্য প্রচার করা হলেও অবস্থাটা ছিল ‘কাজির গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই’-এর মতোই
এর আগে প্রাথমিক স্তরে ভর্তির হার বাড়ানো এবং ঝরে পড়া রোধে নব্বই-পরবর্তী বিএনপি সরকারের প্রধান কর্মসূচি ছিল ‘শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য’ প্রথম শিক্ষক, পরে ডিলারের মাধ্যমে চাল বা গম দিয়েও দুর্নীতি ঠেকানো যায়নি এরপর সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০০২ উপবৃত্তি বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন দেখা যায়, চাল বা গম বিতরণে দুর্নীতি যতটা ছিল, নগদ টাকা দেওয়ার বেলায় তা তুলনামূলক কম কিন্তু কে দরিদ্র, কে নয়—মফস্বলে এ প্রশ্নের সমাধান বেশ কঠিন
আওয়ামী লীগ সরকারের সার্বিক সাক্ষরতা আন্দোলন কর্মসূচিও পরিত্যক্ত হয়েছে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার সার্বিক সাক্ষরতা আন্দোলন (টিএলএম) রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, লুটপাট, শুভঙ্করের ফাঁকি এবং অপচয়ের নজির স্থাপন করেছে ২০০০ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শাসনামলে সাক্ষরতার হার দাবি করা হয়েছিল ৬৫ দশমিক ৫ বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ওই হার অতিরঞ্জিত দাবি করে সরকারিভাবে তা ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ বলে জানানো হয় জোট সরকারের পাঁচ বছরের শাসন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছরের মেয়াদে সাক্ষরতার ওই হার উল্লেখ করা হয়েছে এখন বলা হচ্ছে, সাক্ষরতার হার পঞ্চাশের কাছাকাছি ২০১৪ সালের মধ্যে এই হার সত্যিকার অর্থে শতভাগে উন্নীত হবে, না এটা আবারও অঙ্গীকার হয়ে থাকবে, সেটি এখন দেখার বিষয়

ওপেন মিডিয়া লাইন
প্রথম আলোর সাথে সাথে আমরাও যথাযথ কতৃপক্ষে দৃষ্টি আকরশন করছি।


সুত্রঃ প্রথম আলো
তারিখঃ মঙ্গলবার, ৮ মার্চ ২০১১

0 আপনার মতামত:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।

Avro Keyboard - Unicode Compliant FREE Bangla Typing Softwareবাংলা লিখার সপ্টওয়্যার আভ্র ডাউনলোড করতে খানে ক্লিক করুন
 
 
 

বিশাল বাংলা

কম্পিউটার প্রতিদিন

রাজনীতি...

বিনোদন

খেলার খবর

অর্থ ও বাণিজ্য