অবশেষে অনেক চেষ্টা করেও শুক্রবার কোম্পানীগঞ্জ যেতে পারেননি চার মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত পলাতক আসামি ও ঢাকাস্থ তেজারত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লায়ন শেখ মহিউদ্দিন। এদিন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদ এমপি এলাকায় গিয়ে বিএনপির তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন। তবে ওয়ারেন্ট থাকায় গ্রেপ্তারের ভয়ে লায়ন শেখ মহিউদ্দিন কোম্পানীগঞ্জ যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত পুলিশের ভয়ে তিনি আর যেতে পারেননি। কারণ দীর্ঘদিন তার ওয়ারেন্টের বিষয়টি গোপন থাকলেও সম্প্রতি অনলাইন পত্রিকা ‘নোয়াখালী ওয়েব’ -এ সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশের পর এখন পুলিশ প্রশাসনেরও টনক নড়েছে। তারা মহিউদ্দিনকে পাওয়া মাত্র গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে। এতে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে লায়ন শেখ মহিউদ্দিন।
এদিকে থানায় থাকা ওয়ারেন্ট গুলোর ‘রি-কল’ সংগ্রহ করতে মঙ্গলবার থেকে আপ্রাণ চেষ্টা করে আসেন শেখ মহিউদ্দিন ও তার আইনজীবি আলতাফ হোসেন। কিন্তু শুক্রবারের আগে তার ওয়ারেন্টের ‘রি-কল’ গুলো আনার জন্য অতিরিক্ত টাকার দেয়ার কথা জানালেও আইনগত জটিলতার কারণে তা আর সম্ভব হয়নি। ফলে অনেক চেষ্টা করেও এলাকায় যাওয়ার ব্যাপারে স্থানীয় বিএনপিতে তার গ্রুপের নেতা-কর্মীদের অনুরোধ রক্ষা করতে পারেননি লায়ন শেখ মহিউদ্দিন। এতে তার ভবিষ্যতে এমপি নির্বাচন করার ব্যাপারেও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন।
প্রসঙ্গত; নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের খাতায় লায়ন শেখ মহিউদ্দিন একজন ওয়ারেন্টভূক্ত পলাতক আসামি। তার বিরুদ্ধে ওই থানায় বিশেষ ট্রাইব্যুনালসহ চারটি মামলার ওয়ারেন্ট রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, লায়ন শেখ মহিউদ্দিন তার ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান তেজারত হেলথ কেয়ারের নামে আমদানি করা মহিলাদের গর্ভবতী পরীক্ষার মেয়াদোত্তীর্ণ (স্টিক) বস্তুকে প্রতারণার মাধ্যমে স্টিকার লাগিয়ে মেয়াদ বাড়িয়ে বিক্রির দায়ে তার বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ থানায় ২০০০ সালে মামলা হয়। এ ঘটনায় তার একজন বিক্রয় প্রতিনিধিকে আটকও করে পুলিশ।
ওয়ারেন্টগুলো হচ্ছে, বেগমগঞ্জ থানার মামলা নং-২৮, তারিখ- ২১ জুন ২০০০ইং, এ মামলার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল নং- ৭৭/২০০০, জিআর-২৪৩/২০০০। এছাড়া রূপালী ব্যাংকের ঋণখেলাপির দায়ে ঢাকার অর্থঋণ আদালত-৩ থেকে তার বিরুদ্ধে মেসার্স ওয়াসা লাইন্স (বিডি) ও মেসার্স তেজারত হেলথ কেয়ার মার্কেটিং কোম্পানীর নামে আরও তিনটি ওয়ারেন্ট জারি করা হয়। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকও শেখ মহিউদ্দিন নিজে। ওয়ারেন্টগুলো হচ্ছে, অর্থজারি-২৮৬/২০০৫, অর্থজারি-২৮৬/২০০৬ ও অর্থজারি-২৮৮/২০০৫।
এদিকে ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদের বিকল্প প্রার্থী হিসাবে আগামি নির্বাচনে প্রার্থী হবেন ঘোষণা দেয়ায় শেখ মহিউদ্দিন মওদুদেরও বিরাগভাজন হয়েছে বলে বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী জানিয়েছে। এনিয়ে চলছে দুই জনের এখন দা-কুমড়া সম্পর্ক। আগামি পর্বে এনিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। আমাদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে কেউ কোন তথ্য দিতে চাইলে ০১৮১৬৫৫৩৩৬৬ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
0 আপনার মতামত:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।