যে মিলনে কান্না কেবল

রবিবার, ২০ মার্চ, ২০১১

বিদেশ থেকে স্বামী ফিরলে স্ত্রীরা খুশি হন। বহুদিন পর দেখা হবে, ফলে হূদয়ে থাকে বসন্তের রং। কিন্তু পারভীন বেগম স্বামীকে দেখবেন বলে কি রঙিন হয়ে বিমানবন্দরে এসেছিলেন সেদিন? নাকি তাঁর হূদয়ে ছিল আশঙ্কার উথালপাতাল ঢেউ? বাংলাদেশে বসে যখন লিবিয়ার গণবিদ্রোহের খবর শুনছিলেন, টেলিভিশনে দেখছিলেন আন্দোলনরত মানুষ আর অস্ত্রধারী সরকারি বাহিনীর দ্বৈরথ, তখন তাঁর মনের মধ্যে কী খেলা চলছিল? না জেনেও দিব্যি বলে দিতে পারি, সে সময়ের পুরোটা জুড়ে লিবিয়ায় কর্মরত স্বামীই ছিলেন পারভীন বেগমের ভাবনা-চিন্তা, ওঠা-বসার কেন্দ্রবিন্দু।
বহু কাঠ-খড় পুড়িয়ে স্বামী লিটন দেশে ফিরলেন, কিন্তু বিমানবন্দরে দেখা হলো না পারভীনের সঙ্গে। লিটনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সন্ধ্যায় হাসপাতালেই দেখা হলো স্বামী-স্ত্রীর।
খুব মামুলি কাহিনি হয়তো। এর মধ্যে বিশেষত্ব কী আছে? ‘অতঃপর তাহারা সুখে-শান্তিতে বসবাস করিতে লাগিল’ বলে আমরাও পরবর্তী তরতাজা খবরের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারতাম। কিন্তু তা পারা গেল না ১৪ মার্চ প্রথম আলোর শেষের পাতায় প্রকাশিত ছবিটির কারণে। ছবিটি মন থেকে সরতে চাইছে না। একজন মানুষ সব হারিয়ে দেশে ফিরেছেন, যাঁর ভবিষ্যৎ বলে কিছু নেই, গন্তব্য বলে কিছু নেই—ছবিতে ফুটে উঠেছে সেটাই। ২৫ হাজার টাকা মাসিক বেতনের চাকরি নিয়ে দেড় বছর আগে লিবিয়ার বেনগাজিতে গিয়েছিলেন লিটন। কিন্তু ওখানে গিয়ে দেখেন, সব ওলট-পালট—মাসিক বেতন ১০ হাজার টাকা ধার্য করা হয়েছে। কিন্তু গত পাঁচ মাস বেতন পাননি। ভাবা যায়! বহু কষ্টের কথা শুনিয়েছেন লিটন। সেসব এখন অতীত। কিন্তু স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে কোথায় দাঁড়াবেন লিটন, কী করবেন এখন, কীভাবে গড়বেন ভবিষ্যৎ, এর কোনো উত্তর নেই। এ রকম হাজারো লিটন আটকা পড়েছিলেন লিবিয়ায়। হাজারো দুঃখের কাহিনি এখনো বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। কজনকে তা স্পর্শ করছে?

0 আপনার মতামত:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।

Avro Keyboard - Unicode Compliant FREE Bangla Typing Softwareবাংলা লিখার সপ্টওয়্যার আভ্র ডাউনলোড করতে খানে ক্লিক করুন
 
 
 

বিশাল বাংলা

কম্পিউটার প্রতিদিন

রাজনীতি...

বিনোদন

খেলার খবর

অর্থ ও বাণিজ্য