‘আমার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে’ কমিটির প্রধান ও কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ!

রবিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১১

নিজ বক্তব্য থেকে পিছু হটেছেন পুঁজিবাজারে অস্থিরতার কারণ অনুসন্ধানে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ও কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। বলেছেন, বাজার কেলেঙ্কারীর সঙ্গে জড়িতদের বিচার নিয়ে গণমাধ্যমে তার দেয়া বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে।

শুক্রবার রাতে বিবিসি বাংলা বিভাগকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্শাল ল’- তে অভিযুক্তদের বিচার সম্ভব বক্তব্য থেকে সরে এসে তিনি বলেন, এ ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাতেই সম্ভব। তা যদি যথাযথভাবে আদালতে উপস্থাপন করা হয়।

http://rtnn.net/newsimage/sec_1/subsec_3/130294159320110416.jpg

এ ধরনের বিচার প্রচলিত ব্যবস্থায় সম্ভব নয়, কেবল সেনা শাসনেই সম্ভব- কমিটির প্রধান খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ সংবাদ মাধ্যমে এ ধরনের মন্তব্য করেছেন বলে যে সব বক্তব্য এসেছে তা তিনি নাকচ করে দিয়ে বলেন, তার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ‘এই মন্তব্যটি আমি করিনি। আমি অনুরোধ করবো- যারা টেলিভিশনের ওই অনুষ্ঠানটি দেখেছেন তারা যেন কথাটি সঠিক করে বলেন। কেননা এখন এ বিষয়ে আমি যতো কথায় বলি তা হয়তো অনেকেই বিশ্বাস করবে না। এজন্য তারা ওই অনুষ্ঠানটি যেন দেখে নেন।’

বিবিসি-কে তিনি বলেন, ‘আমি যেটা বলেছিলাম, সেটি আবারো বলি- আমি আমাদের বিচার ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলেছিলাম। গণতান্ত্রিক দেশের প্রচলিত বিচার ব্যবস্থায় যথেষ্ট শক্ত প্রমাণ নিয়ে আদালতে যেতে হয়। তা না হলে মামলায় জেতা মুশকিল হয়ে পড়ে। মার্শাল ল’- তে সেটা নেই। এটাতে শক্ত তথ্য-প্রমাণ লাগে না। একটা প্রমাণই বিচারের জন্য যথেষ্ট।’

ইব্রাহিম বলেন, ‘আমি মূলত এটা বলেছিলাম। এটার সঙ্গে আমাদের তদন্ত প্রতিবেদনের কোনো সম্পর্ক ছিল না। তদন্তের বিষয় এখানে আসবেই না। অথচ তদন্ত প্রতিবেদকে জড়িয়ে তারা আমার বক্তব্যকে বলেছেন মার্শাল ল’। মার্শাল ল’-এর সঙ্গে তদন্ত প্রতিবেদনে জড়িতদের বিচারের কোনো সম্পর্ক নেই।’

কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের বিচার প্রচলিত আইনেই সম্ভব কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অনেকটাই সম্ভব। আমি কখনো বলবো না যে, সবক’টি পারা যাবে। এই ব্যাপারগুলো তো লেখা-পড়ার ব্যাপার নয়। বাজারে খেলার ব্যাপার। এখানে তারা যে খেলেছে- এটা প্রমাণ করতে হলে যেমন ১০জন একত্রে কাজ করেছে তাদের খেলার এই তথ্যগুলো প্রকাশ করতে হবে। এ কাজগুলো খুবই কঠিন। তো শাস্তি দিতে হলে ওইগুলো প্রতিষ্ঠিত করতে না পরলে শাস্তি দেয়া মুশকিল হয়ে যায়।’

তদন্ত কমিটির প্রধান আরো বলেন, ‘আমাদের তদন্ত প্রতিবেদনে কতকগুলো সুনিশ্চিত তথ্য-প্রমাণসহ অভিযোগ রয়েছে। আমি মনে করি, এগুলোতে অভিযুক্তদের ধরা এবং শাস্তি দেয়া একেবারেই সহজ। যেমন- আমরা কয়েকটি দুর্নীতির কথা বলেছি। এসইসি’র উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা শেয়ার ব্যবসা করতে পারেন না। অথচ করেছেন, কতো তারা টাকা বিনিয়োগ করেছেন, কোনো ব্যাংকে করেছেন, কতো নম্বর অ্যাকাউন্টে করেছেন সবই আমরা সুনির্দিষ্টভাবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছি।’

তিনি বলেন, ‘তবে আমরা তো প্রসিকিউটর না। আমরা ছিলাম তদন্তকারী। আমরা তদন্তে তথ্যগুলো তুলে এনেছি। এখানে প্রসিকিউটর হলো এসইসি নিজেই। এসইসি এই তথ্যগুলোকে নিয়ে মামলা সাজাবে। এরপর এসইসিই বিচারকের কাছে যাবে। কিন্তু এসইসিতে অবস্থানকালীন যারা এই কারসাজিগুলো করেছেন তারা প্রসিকিউসনের ভূমিকা কিভাবে করবেন তা আমার পক্ষে বলা মুশকিল।’

তদন্ত প্রতিবেদনের তথ্য-প্রমাণ কী বিচারের জন্য যথেষ্ট- বিবিসির এমন প্রশ্নের উত্তরে ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ‘না এগুলো যথেষ্ট নয়। দেখুন- আমি যদি ১০টি অভিযোগ উল্লেখ করে থাকি তাহলে তো ১০টিই শক্ত তথ্য-প্রমাণ হবে না। এর মধ্যে পাঁচটি হয়তো শক্ত প্রমাণ। প্রসিকিউটাররা যদি গাফিলতি না করেন তাহলে আদালতে যে পাঁচটি শক্ত তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপিত হবে তা-ই বিচারের জন্য যথেষ্ট। বাকি পাঁচটি আদালতে নির্দোষ তথ্যও হতে পারে। বড় কথা আমরা কাউকে দোষী বলেনি। বলেছি- অভিযুক্ত।’

অভিযুক্তরা নিজেদেরকে নির্দোষ প্রমাণে শক্ত যুক্তি হাজির করতে পারেন তাহলে প্রতিবেদন প্রশ্নের মুখে পড়বে কি- তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা হলে আমিই খুশি হব। অবশ্যই আমি খুশি হব যদি তারা নিজেদের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগকে অসার প্রমাণ করতে পারেন।’

ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ‘প্রচলিত আইনেই এদের বিচার সম্ভব। তবে প্রচলিত আইনের একটি গণতান্ত্রিক দিক হলো- এটাকে ভালোভাবে আদালতে উপস্থাপন করতে হবে। আর আদালতে উপস্থাপনের জন্য এক্ষেত্রে আমরা একটি ভালোমতো তথ্য-প্রমাণ প্রতিবেদনে তুলে আনতে পেরেছি বলেই আমি বিশ্বাস করি। বাকি কাজ এসইসির।’

0 আপনার মতামত:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এমন কোন মন্তব্য করবেন না যা রাজনীতিক বা সামাজিক ভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করে।

Avro Keyboard - Unicode Compliant FREE Bangla Typing Softwareবাংলা লিখার সপ্টওয়্যার আভ্র ডাউনলোড করতে খানে ক্লিক করুন
 
 
 

বিশাল বাংলা

কম্পিউটার প্রতিদিন

রাজনীতি...

বিনোদন

খেলার খবর

অর্থ ও বাণিজ্য